মুর্শিদাবাদের বয়রাঘাট এলাকা বরাবর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সৌজন্যের নজির। শনিবার সকালে পথ ভুলে ভারতের মাটিতে ঢুকে পড়েছিলেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-র এক জওয়ান। দীর্ঘ ঘাসে ঢাকা ছিল সীমান্তবর্তী এলাকা, কোথাও কাঁটাতারের বেঁধে দেওয়া সীমারেখাও নেই। সীমান্ত বুঝতে না পেরে তিনি ঢুকে পড়েন ভারতের ভূখণ্ডে। তবে তাঁকে আটক না করে, কড়া আইনগত পদক্ষেপ না নিয়ে মানবিকতার নজির রেখে ফিরিয়ে দিল বিএসএফ।
আরও পড়ুন:
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে। বয়রাঘাট এলাকার সীমান্তের একটি অংশে দীর্ঘদিন ধরেই কাঁটাতার নেই। তার উপর বর্ষার কারণে চারপাশে গজিয়ে উঠেছে উঁচু, ঘন ঘাস। সেই ঘাসের আড়ালে হারিয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্ত চিহ্নিত করা পিলারগুলি। এই ঘাসের জঙ্গলের মধ্য দিয়েই টহল দিচ্ছিলেন বিজিবি-র এক জওয়ান। মনে করা হচ্ছে, গন্তব্য হারিয়ে ফেলেই তিনি ভুল করে ভারতে ঢুকে পড়েন। চোখে পড়ার মতো কোনও সীমারেখা ছিল না, ফলে বিভ্রান্তি থেকেই এই পারাপার।
ভারতের দিকে টহলে থাকা বিএসএফ জওয়ানরা তাঁকে দেখতে পেয়ে ধরে ফেলেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর শুরু হয় পরিচয় যাচাই এবং পুরো ঘটনার অনুসন্ধান। বিএসএফের তরফে দ্রুত যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে একটি ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মিটিং অনুষ্ঠিত হয় শনিবার বিকেলে। উপস্থিত ছিলেন দুই বাহিনীর আধিকারিকেরা। আলোচনার মাধ্যমে বোঝাপড়ায় আসে যে, ঘটনাটি পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত এবং পরিস্থিতির জন্য দায়ী প্রাকৃতিক বাধা। কোনও অপরাধমূলক উদ্দেশ্য এতে ছিল না ওই জওয়ানের।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিএসএফ সৌজন্যের পথে হেঁটে বিজিবি জওয়ানকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। সন্ধ্যার মধ্যেই তিনি নিজ দেশে ফিরে যান। বিএসএফ-এর দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র এনকে পান্ডে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকালে এক বিজিবি জওয়ান সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের ভিতরে ঢুকে পড়েছিলেন। তবে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে আলোচনা করে তাঁকে সেদিনই বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি যেমন সামান্য ভুল বোঝাবুঝির ফল, তেমনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে এখনও যোগাযোগ, সৌজন্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক অটুট আছে।