সাম্প্রতিক সময়ে বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক বিতর্কিত ভাষণের পর থেকেই এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ভোটের মাঝে এই নিয়ে চরম অস্বস্তিতেও পড়েছে রাজ্যের শাসকদল। এরই মাঝে এবার রাজভবনের তরফ থেকে রামকৃষ্ণ মিশন নিয়ে এক বিবৃতি জারি করা হল। যৌন হেনস্থা এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগে জর্জরিত রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বুধবারই দিল্লি গিয়েছিলেন। এরই মাঝে গতকাল রাতে রাজভবনের অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে রামকৃষ্ণ মিশন সংক্রান্ত একটি বিবৃতি জারি করা হয়। (আরও পড়ুন: ‘টাকা নিয়ে ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়’, আদালতের রায়ের পর বিস্ফোরক অভিযোগ সেলিমের)
আরও পড়ুন: বুথভিত্তিক তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশের আইনি বাধ্যবাধকতা নেই,এতে বিভ্রান্তি বাড়বে: EC
আরও পড়ুন: কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, এবার হাই কোর্টে মামলা অভিজিতের
রাজভবনের জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বাংলার মানুষের মনে রামকৃষ্ণ মিশনের জন্য এক গর্বের জায়গা রয়েছে। গোটা বিশ্বের জন্য এটা অনুপ্রেরণার এক উৎস। যদি কেউ জেনে বুঝে বা অজান্তে এই সংগঠনকে কোনও ভাবে অসম্মান করে এবং শ্রী রামকষ্ণ পরমহংস ও স্বামী বিবেকানন্দ সহ আরও মহান ব্যক্তিত্বদের সমৃতিকে অসম্মান করে, তাহলে তা মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করবে।' এরপর ভারত সেবাশ্রম নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, 'ভারত সেবাশ্রম হল এক আধ্যাত্মিক মরূদ্যান। লাখ লাখ মানুষকে এই সংগঠন ত্রাণ দিয়ে এসেছে বিগত দিনে। তাদের ভালোবাসা উচিত, সম্মান করা উচিত। তাদের সম্মানহানি করা কোনও ভাবেই উচিত নয়।'
আরও পড়ুন: ময়দানে মেট্রোর ভবিষ্যৎ কী? হাই কোর্টে দীর্ঘ শুনানির পর যা জানা গেল...
এর আগে নির্বাচনের সময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগ করে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজকে বিঁধেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশনকেও 'কাঠগড়ায়' তুলেছিলেন। পরে অবশ্য সুর নরম করেছিলেন মমতা। তবে ১৮ মে তাঁর যে ভাষণ ঘিরে এই বক্তব্য, তাতে তিনি বলেছিলেন, 'সব সাধু এক হন না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে... কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরেই আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না... সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছে।'
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ৭৭টি মুসলিম শ্রেণিকে OBC সংরক্ষণ দেওয়া গণতন্ত্রকে অপমান: HC
এরপর মমতা আরও বলেছিলেন, 'কে কে এই সব করছে, আমি তাদের চিহ্নিত করছি। আমি রামকৃষ্ণ মিশকে কোন সাহায্যটা করিনি। সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি সমর্থন করেছিলাম আপনাদের। সিপিএম কিন্তু তখন আপনাদের কাজ করতে দেয়নি। আর আসানসোলে একটি রামকৃষ্ণ মিশন আছে... দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলা হয়। কেন সাধুরা এই কাজ করবেন? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই সম্মান করে। ওদের যারা মেম্বার হয়, দীক্ষা নেয়, তারা আছে। তাদের আমি ভালবাসতে পারি। আমি দীক্ষা নিতে পারি। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন ভোট দেয় না কোনও দিনও। এটা আমি জানি। তা হলে আমি অন্যকে কেন ভোট দিতে বলব? মনে রাখবেন, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকত না, আপনাদের এই মেয়েটা যদি না থাকত।'