জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর বদলি সংক্রান্ত মামলার সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে শুনানি হয়। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এই মামলায় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে হলফনামা তলব করেন। সেই সঙ্গে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন, অনিকেত যদি বদলি নিতে রাজি না হন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া চলবে না। এই পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'FIR হোক দেবাশিস-অনিকেতের নামে', হুঁশিয়ারি কুণালের, পালটা জবাব কিঞ্জলের
হাইকোর্টে অনিকেতের আইনজীবী দাবি করেন, যেহেতু মামলাটি এখনও বিচারাধীন, তাই আপাতত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেই অনিকেতের জন্য একটি পদ সংরক্ষিত রাখা হোক। তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা সওয়ালে জানানো হয়, অনিকেতের পিজি র্যাঙ্ক ২৪। এই অবস্থানে থেকে তিনি আরজি করেই থাকবেন, এমন কোনও নিয়ম বা অধিকার নেই। তবে আদালত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি।
উল্লেখ্য, অনিকেত মাহাতোর আগে একই ধরনের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আরও দুই জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার ও আসফাকুল্লা নাইয়া। তাঁরা তিনজনই রাজ্যজুড়ে আলোড়ন তোলা জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন। সেই আন্দোলন শুরু হয়েছিল তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে।এই তিন চিকিৎসকের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী পোস্টিংয়ের জন্য কাউন্সেলিং হয়েছিল এবং সেখানে তাঁরা নিজেদের পছন্দের জায়গা জানিয়েছিলেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁদের সেই পছন্দ অনুযায়ী পোস্টিং দেওয়া হয়নি। বরং, কাউন্সেলিং প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য করে তাঁদের এমন জায়গায় বদলি করা হয়েছে, যেগুলো তাঁদের পছন্দের তালিকায় ছিল না। আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জেরেই তাঁদের বিরুদ্ধে এ হেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
ডব্লিউবিজেডিএফ নামে জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন তখন জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনজনই আদালতের শরণাপন্ন হবেন। সেইমতো গত ৩০ মে দেবাশিস এবং আসফাকুল্লা হাই কোর্টে মামলা করেন। পরে অনিকেতও আলাদা মামলা দায়ের করেন। দেবাশিসের পোস্টিং হয়েছে মালদহের গাজোলে, আসফাকুল্লার হুগলির আরামবাগে এবং অনিকেতকে পাঠানো হয়েছে রায়গঞ্জে।