১০০ দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে মালদার সিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। গ্রামবাসীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উঠে এসেছে বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির তথ্য। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল পঞ্চায়েত প্রধান নিজেই স্বীকার করেছেন দুর্নীতি হয়েছে। তারপরেই পুলিশকে কড়া বার্তা দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: দু’মাসের বেতন মেলেনি কলকাতা পুরসভার ১০০ দিনের কর্মীদের, অভিযোগ ঘিরে তরজা
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধান দাবি করেছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা সরাসরি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নেও বিপুল পরিমাণ টাকা অপব্যবহার করা হয়েছে। এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও মালদার পুলিশ সুপারকে কড়া বার্তা দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাসের বেঞ্চ আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুত অর্থ উদ্ধারেরও নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পক্ষের আইনজীবী অনিন্দ্য ঘোষ জানিয়েছেন, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সিরপুরে একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে চলেছে লাগাতার দুর্নীতি। অভিযোগ, অন্তত ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার গরমিল রয়েছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১ লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের প্রকল্পে টেন্ডার ডাকার বাধ্যবাধকতা আছে। অথচ দেখা যাচ্ছে, ১০ লক্ষ বা তারও বেশি টাকার প্রকল্পকে ইচ্ছে করে ছোট দেখানো হয়েছে, যাতে নিয়ম না মেনে সরাসরি পরিচিতদের হাতে কাজ তুলে দেওয়া যায়। এই পুরো ঘটনায় যে টাকা নয়ছয় হয়েছে, সেই অর্থ উদ্ধারে পঞ্চায়েত প্রধান সহযোগিতা করছেন বলে পুলিশ সূত্রে আদালতকে জানানো হয়েছে। মাশরুম চাষ, ড্রাগন ফল চাষের বিভিন্ন প্রকল্পের নামে দুর্নীতি বলে অভিযোগ। আদালত সেই টাকা উদ্ধার করতে বলেছে।
এদিকে, সম্প্রতি আদালত আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। যারফলে চলতি বছরের ১ অগস্ট থেকে রাজ্যে ফের চালু হতে চলেছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্প নতুন করে শুরু করবে বলে জানিয়েছে। তবে, আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করবে আরও কঠোরভাবে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, ভবিষ্যতে যাতে একই ধরনের অনিয়ম না ঘটে, তার জন্য উপযুক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।