গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে প্রশ্ন করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। এই কর্মসূচি জনস্বার্থ বিরোধী বলে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে অভিষেকের ডাকা ঘেরাও কর্মসূচি বাতিল হয়ে গেল। আগামী ৫ অগস্ট বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্ট। ফলে ৫ অগস্ট থেকে রাজ্যের সমস্ত ব্লক স্তরে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির যে ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক সেটা আপাতত হচ্ছে না প্রধান বিচারপতির নির্দেশের জেরে। ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে ৫ অগস্ট বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিলেন অভিষেক। যার প্রেক্ষিতে মামলা করে বিজেপি।
এদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে প্রশ্ন করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। এই কর্মসূচি জনস্বার্থ বিরোধী বলে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে। সেখানেই এই কর্মসূচিতে স্থগিতাদেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
ঠিক কী বলেছিলেন অভিষেক–মমতা? একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশে অভিষেক বলেছিলেন, ‘আগামী ৫ অগস্ট থেকে সমস্ত বুথ, অঞ্চল, ব্লক, জেলা থেকে রাজ্যস্তরের বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করতে হবে। তবে বাড়িতে বয়স্ক মানুষ থাকলে তাঁকে ছেড়ে দেবেন। বিজেপি নেতা বাড়ি থেকে বেরোবেনও না, ঢুকবেনও না। তবে শান্তিপূর্ণভাবে করবেন। কারও গায়ে হাত দেবেন না। প্রথমে এখানে গণঘেরাও কর্মসূচি হবে। তার পর দিল্লি ঘেরাও হবে।’ তারপরে কিছুটা পরিবর্তন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘এই কর্মসূচি হবে ব্লক স্তরে। আর ঘেরাও করা হবে বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে। প্রতীকী ঘেরাও। যাতে কেউ বলতে না পারেন যে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’
ঠিক কী বলেছেন বিচারপতি? কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, ‘কেউ যদি বলেন, কাল হাইকোর্ট ঘেরাও করা হবে। তবে কি সরকার বা পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করবে না? কেউ যদি কোথাও বোমা রাখা হবে বলে, তাহলে কি সরকার বা পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করবে না? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আপনারা কী পদক্ষেপ করেছেন? রাজ্য সাধারণ মানুষকে নিয়ে চিন্তিত নয়, এটা খুব উদ্বেগজনক। এতে সাধারণ মানুষের হয়রানির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। দায়িত্বশীল সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে এমন ধরনের মন্তব্য অনভিপ্রেত। ২১ জুলাই গোটা দিন নষ্ট হয়েছে। আদালত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা সাড়ে ১১টার মধ্যে চলে যেতে বাধ্য হয়েছি। আইনজীবীরা আসতে পারেননি। আদালতের কর্মীরা ট্রেন ধরতে পারেননি।’ পাল্টা তখন অভিষেকের আইনজীবী সওয়াল করে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে না।’ প্রধান বিচারপতি তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘সেটা কে নিশ্চিত করবে? ২১ জুলাই আপনি আদালতে আসতে পেরেছিলেন?’ প্রধান বিচারপতি ১০ দিনের মধ্যে সব পক্ষকে এই বিষয়ে হলফনামা পেশ করার নির্দেশ দেন।