সমস্ত বিবাদ, বিতর্ক, জল্পনা, দ্বন্দ্ব ছুড়ে ফেলে তিনি যে দুরন্ত গতিতেই তাঁর ফর্মে ফিরেছেন, সেই আভাস মিলেছিল গত শনিবারের (১৫ মার্চ, ২০২৫) ভার্চুয়াল বৈঠকেই। ভোটার তালিকা থেকে 'ভূত তাড়াতে' সেই ভার্চুয়াল বৈঠক করা হয়েছিল। যার কেন্দ্রে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।এরপর গতকাল (বৃহস্পতিবার - ২০ মার্চ, ২০২৫) দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আরও একবার স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন, দলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড' আসলে কে! জানিয়ে দিলেন শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) থেকে পরবর্তী সাতদিন তিনি নিজে লন্ডন সফরে থাকাকালীন দলের রাশ 'যৌথভাবে থাকবে' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় এবং সুব্রত বক্সির উপর। এমনকী, এর আগে সুব্রত বক্সিকেও 'আমাদের নেতা' বলে অভিষেককে সম্বোধন করতে দেখা গিয়েছে।আর এবার সেই 'নেতার' নামেই ছেয়ে গেল দক্ষিণ কলকাতা! সমাজমাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, 'তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের পক্ষ থেকে' দক্ষিণ কলকাতাজুড়ে এক বিশেষ ধরনের পোস্টার, ব্যানার ও পতাকা ছেয়ে ফেলা হয়েছে। উজ্জ্বল হলুদ রঙের সেই পতাকায় গোটা গোটা কালো হরফে লেখা রয়েছে দু'টি শব্দ 'অধিনায়ক অভিষেক'! তার নীচে ইংরেজি হরফে লেখা - হ্যাশট্যাগফ্যামফরটিএমসি (তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি সমর্থন বা তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের তরফে)!অর্থাৎ - বার্তা একেবারে স্পষ্ট। ছাব্বিশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেই ফের একবার 'সেনাপতি' করে ভোটের লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আর, এসবই যে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সমর্থনেই হচ্ছে, সেটাও সমান স্পষ্ট।সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা খবর অনুসারে, এবারও তৃণমূলের ভোটের প্রচার থেকে শুরু করে সামগ্রিকভাবে নির্বাচনী রণকৌশল স্থির করতে বড় ভূমিকা পালন করবে দলের সোশাল মিডিয়া সেল। আর, সেই কৌশলে নেতৃত্ব দেবে ভোটকুশলী সংস্থা আইপ্যাক। সূত্রের দাবি, ভোটের সেই ভার্চুয়াল রণকৌশ স্থির করতে আগামী ২৩ মার্চ বৈঠকে বসবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংশ্লিষ্ট নেতা ও কর্মীরা।অর্থাৎ - মমতা বিদেশে থাকাকালীনই এই বৈঠক হতে চলেছে। এর থেকে আরও একবার স্পষ্ট হচ্ছে যে অভিষেকের সেনাপতিত্বতে নেত্রী মমতার পূর্ণ আস্থা, ভরসা ও সমর্থন রয়েছে।প্রসঙ্গত, ছাব্বিশের ভোট হতে এখনও প্রায় একবছর বাকি থাকলেও বাংলাজুড়ে ইতিমধ্য়েই নির্বাচনী আবহ ফুটে উঠেছে। ভূতুড়ে ভোটার ইস্যুতে মমতার আক্রমণ ও পরবর্তীতে নির্বাচনী কমিশনের ভুল স্বীকারের ঘটনা ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসকে বড় অক্সিজেন জুগিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।এই প্রেক্ষাপটে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব ঘুচিয়ে মমতা ও অভিষেকের সমন্বয়ে সর্বশক্তিতে নির্বাচনী লড়াইয়ে ঝাঁপাতে তৃণমূল কংগ্রেস যে কোনও খামতি রাখতে চায় না, তা আগামী ২৩ তারিখের বৈঠক এবং 'অধিনায়ক অভিষেক' প্রচারেই স্পষ্ট বলে মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।