পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল প্রত্যেক বছর বর্ষায় বানভাসীর আকার নেয়। তার জেরে ভুগতে হয় বিপুল গ্রামবাসীদের। বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে শুরু করে গবাদি পশু জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া এবং রাস্তাঘাট, জমির ফসলের ক্ষতি–সহ মানুষের প্রাণহাণির ঘটনা ঘটে থাকে। কেন্দ্রীয় সরকার এখানে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান গড়ে তুলতে সাহায্য করেনি। বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে সাহায্য করতে অনুরোধ করলেও সাড়া মেলেনি। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করে এবং কাজ শুরু হয়। এই কাজ না হলে প্রত্যেক বছরই সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই বন্যা দেখা দেবে।
ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়ণের দাবি দীর্ঘদিনের। কারণ তাতেই জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে। এবার সেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমির মাপজোকের কাজ শুরু হল। আর তা হতেই এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পাল্টা কমিটি গড়লেন দাসপুর ১ এবং ২ নম্বর বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের গড়ে তোলা কমিটির নাম চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিবাদী কমিটি। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের দাবি, দাসপুর ১ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুরের চন্দ্রেশ্বর খাল থেকে শুরু করে সুরতপুর শিলাবতী নদী পর্যন্ত নতুন করে খাল খনন করতে দেওয়া হবে না। এই খাল খনন করলে তিন ফসলি জমি এবং প্রচুর ঘরবাড়ি নষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: মহানগরীর ৮টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে, কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
এই বিষয়টি নিয়ে চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিবাদী কমিটি একটি লিফলেটও ছড়ানো শুরু করেছে দাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে। বন্যার সময় শিলাবতী নদীর জলের চাপ কমাতে সুরতপুর থেকে বৈকুণ্ঠপুর পর্যন্ত একটি নতুন খাল কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেচ দফতর। এই খাল কাটতে হলে কয়েকশো হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে চায় রাজ্য সরকার। তাই প্রতিবাদ করছেন গ্রামবাসীরা। চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিবাদী কমিটির সম্পাদক হরেকৃষ্ণ জানা বলেন, ‘প্রশাসনের পরিকল্পনায় ভুল আছে। যে এলাকা দিয়ে খালটি খনন করার কথা বলা হচ্ছে সেটাতে প্রচুর তিন ফসলি কৃষিজমি, প্রচুর ঘরবাড়ি নষ্ট হবে। তাতে দাসপুরের দু’টি ব্লকে প্লাবন আরও বাড়বে।’