আরও আকর্ষণীয় হতে চলেছে গড়চুমুক চিড়িয়াখানা। সেখানে প্রাণীদের তালিকায় আসছে একাধিক নতুন চমক। এবছরের পুজোর আগেই গড়চুমুক চিড়িয়াখানায় আনা হবে লেপার্ড ও হায়না। পাশাপাশি, আগামী দু’মাসের মধ্যেই দার্জিলিং চিড়িয়াখানা থেকে আনা হবে দু’টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। বনমহোৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী এবং এলাকার বিধায়ক পুলক রায় একথা ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: গড়চুমুক মিনি জু’র বন্যপ্রাণীদের দত্তক নেওয়া যাবে, বিশেষ উদ্যোগ চিড়িয়াখানার
এই গুরুত্বপূর্ণ চিড়িয়াখানাটিতে প্রথমবারের মতো আসতে চলেছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। মন্ত্রীর কথায়, এখন গড়চুমুক রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম চিড়িয়াখানা। তার পরিকাঠামো ধীরে ধীরে সেই অনুপাতে উন্নত করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর চিকিৎসা ও রক্ষণাবেক্ষণে এখানে ইতিমধ্যেই পশু নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে। এবার প্রাণী সংগ্রহেও গতি আসবে।
শনিবার গড়চুমুক চিড়িয়াখানার পাশে বনবিভাগ ও হাওড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল বনমহোৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান। সেখানেই প্রাণী স্থানান্তর সংক্রান্ত এই বড় ঘোষণা করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠান চলাকালীন উদ্বোধন করা হয় একটি অত্যাধুনিক ‘অ্যানিম্যাল রিকভারি ভ্যান’-এরও। এটি আহত বা বিপন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধারে ব্যবহৃত হবে।
উল্লেখ্য, এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন বনজ প্রাণী যেমন বাঘরোল, সরীসৃপ, পাখি প্রভৃতি আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় গড়চুমুকের পশু চিকিৎসাকেন্দ্রে। এতদিন পর্যন্ত কোনও পরিবহণ ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশকর্মীদের সেই কাজ করতে হত নিজ উদ্যোগে। এবার রাজ্যের সহায়তায় প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চালু হল বিশেষ রিকভারি ভ্যান।
বনমহোৎসব উপলক্ষে দিনভর নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণ, অঙ্কন প্রতিযোগিতা, র্যালির পাশাপাশি ‘গাছ লাগাও, গাছ বাঁচাও’ বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় সর্বত্র। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাবেরী দাস, সরকারি সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি, বনবিভাগের হাওড়া বিভাগের ডিএফও দীপক মণ্ডল-সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিক। সংবর্ধিত হন পরিবেশরক্ষায় সক্রিয় একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থা।
গড়চুমুক চিড়িয়াখানায় এর আগে লেপার্ড বা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার কোনওটাই ছিল না। এবার রাজ্যের অনুমোদন ও পরিকল্পনার পর সেই খামতি পূরণের দিকে এগোচ্ছে প্রশাসন। এই দুটি প্রাণী সংযোজন হলে চিড়িয়াখানার আকর্ষণ যেমন বাড়বে, তেমনই রাজ্যবাসীর কাছেও এটি হয়ে উঠবে এক নতুন গন্তব্য।