দেদার মাদক পাচার হচ্ছিল। অথচ কিছুতেই ধরা যাচ্ছিল না। বারবার অভিযোগ থানায় এলেও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিল পাচারকারী। ধরা পড়ছিল না মাদক। তখনই এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করে পুলিশ। বুঝতে পারে পুলিশের ভিতরেই কেউ এমন আছে যে মাদক পাচারকারীদের সাহায্য করছে। তাও আবার গোপনে। তখন একটা কোর টিম তৈরি করা হয়। সেই টিম অভিযানে নেমে পড়ে মাদক পাচারকারীদের ধরতে। আর তখনই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সিভিক ভলান্টিয়ার। পর্দাফাঁস হয়ে যায় মাদক পাচারের।
এই সিভিক ভলান্টিয়ার গোপনে মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে পুলিশের অভিযোগ। বিপুল পরিমাণ মাদক পাচারে সাহায্য করে মোটা টাকা কমিশন নিত এই সিভিক ভলান্টিয়ার বলে অভিযোগ। আর এবার মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে। এই ঘটনায় বিস্তর অবাক হয়ে যায় পুলিশ। তবে সোমবার মাঝরাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তার ভিত্তিতে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত নকশালবাড়ি ব্লকের বেঙ্গাইজোত এলাকায় অভিযান চালায় এসএসবি। আর সেখানে একটি মোটরবাইকে থাকা দু’জনকে আটক করে।
আরও পড়ুন: বিরাটিতে গ্রেফতার পাকিস্তানের নাগরিক, বাংলাদেশিদের জাল পাসপোর্ট তৈরি করে দিত
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মোটরবাইক আরোহীদের তল্লাশি করতেই বেরিয়ে আসে মাদক মরফিন। তখনই আটক দুই যুবককে নকশালবাড়ি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় তারা। পরে দফায় দফায় জেরা করে তথ্য হাতে আসতেই নকশালবাড়ি থানার পুলিশ ওই দু’জনকেই গ্রেফতার করে। ধৃত যুবকদের নাম—শ্যামলাল সিং, নকশালবাড়ির মাল্লাবাড়ির বাসিন্দা। আর একজন সহদেব বর্মন, নকশালবাড়ির কমলা জোতের বাসিন্দা। ধৃত এই শ্যামলালই নকশালবাড়ি থানার সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিল। আর রাতের অন্ধকারে মাদক পাচারে হাত লাগাত।
ধৃত দু’জনের কাছ থেকে ২৩৪ গ্রাম মরফিন উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মরফিন নকশালবাড়ি থেকে ইন্দো–নেপাল সীমান্তের পানি ট্যাংকির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেখান থেকে পাচার করে দেওয়ার ছক ছিল নেপালে। কিন্তু সব বানচাল হয়ে গেল। এই বিষয়ে দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা একেবারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলছি। চেষ্টা করছি মাদক পাচার নির্মূল করতে। সিভিক ভলান্টিয়ার ধরা পড়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আইন আইনের পথেই চলবে। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে নকশালবাড়ি থানার পুলিশ।’