রামকৃষ্ণ মিশনের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের রহস্যমৃত্যু ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে একটি মহলের তরফে দাবি করা হলেও মৃত কিশোরের পরিবারের তরফে ভয়াবহ ব্ল্যাকমেল ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পরিবার। ঘটনাটি আসানসোলের সেন র্যালে এলাকার।
আরও পড়ুন: স্ত্রী-শ্বশুর-শাশুড়ির নিদারুণ ‘অত্যাচার’, পরদিনই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে গত ২৯ মে রাতে। বছর ১৫-র ওই ছাত্রের দেহ দেখতে পান তার মা ও দিদি। ঘটনার পরে ছাত্রের পরিবার দাবি করে, ছেলেটি গত কয়েক মাস ধরে তীব্র মানসিক চাপে ভুগছিল। তার দিদির অভিযোগ, চাঁদমারি এলাকার এক যুবক তার ভাইকে অপহরণ করে, মাদক খাইয়ে তার আপত্তিকর ছবি তোলে। সেই ছবি দেখিয়ে একাধিকবার তাকে হুমকি দেওয়া হয় এবং ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করা হয়।
তিনি বলেন, ‘ভাই আমাকে জানিয়েছিল, সে আর মানসিকভাবে এই চাপ নিতে পারছে না। তার কাছে আর টাকা ছিল না। এরপর থেকেই সে পুরো চুপচাপ হয়ে যায়।’ পরিবারের দাবি, ইনস্টাগ্রাম মেসেজ, ফোন কল রেকর্ড-সহ একাধিক ডিজিটাল প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। সেগুলি পুলিশকে জমা দেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ওই কিশোর আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, ছেলেটি শান্ত স্বভাবের ও খেলাধূলায় সক্রিয় ছিল। কয়েকদিন ধরে সে আতঙ্কে ছিল বলে শোনা যাচ্ছে। স্কুল ছুটি থাকায় তার খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গিয়েছে, ছেলেটির বাবার মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সংসারের দায়িত্ব একা হাতে সামলাচ্ছিলেন তার মা। সব বাধা পেরিয়েও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক পলাতক। তবে তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। এই ঘটনার পর স্থানীয়দের মতে, এই ধরনের অপরাধ রোধে আরও কড়া নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি ও সচেতনতা না বাড়ালে এমন ঘটনা আবারও ঘটতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে।