প্রায় চার বছর আগে ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার যুবক নাজিমুদ্দিন শেখকে। সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মামলায় অবশেষে রায় ঘোষণা করল কৃষ্ণনগর এডিজে থার্ড কোর্ট। বুধবার বিচারক বসন্ত শর্মা চার দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছ’মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।
আরও পড়ুন: ‘টাইগার’-এর বাড়িতে লুকিয়েও রক্ষা হল না, বাঁকুড়ায় TMC নেতা খুনে ধৃত নাসিম
ঘটনাটি ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতের। বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফিরছিলেন নাজিমুদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন বন্ধু। শিয়ালদা থেকে লালগোলা মিমু লোকাল ট্রেনে ফিরছিলেন। সেখানে এক ক্যাপসিকাম বিক্রেতা মহিলার কান্না দেখেন নাজিমুদ্দিন। জানতে পারেন, তাঁর ব্যবসার পণ্য চুরি হয়ে গেছে। সহানুভূতিবশত নাজিমুদ্দিন ও বন্ধুরা তাঁকে অর্থ সহায়তা করেন। পরে ট্রেনে এক ছানা ব্যবসায়ীর ব্যাগ থেকেই চুরি হওয়া সবজি উদ্ধার হয়। সেগুলি মহিলাকে ফেরত দেন তাঁরা। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কয়েকজন ছানা বিক্রেতা। দেবগ্রাম স্টেশনে নেমে নাজিমুদ্দিন ও তাঁর বন্ধুদের মারধর করা হয়। বন্ধুরা পালাতে পারলেও নাজিমুদ্দিনকে চলন্ত ট্রেনের দুই বগির মাঝের ফাঁক দিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। তাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
পরদিন নাজিমুদ্দিনের দাদা কৃষ্ণনগর জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পাঁচজনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে। বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যেই এক অভিযুক্ত মারা যায়। দীর্ঘ শুনানি শেষে নরেন ঘোষ, বীরু ঘোষ, সুদীপ ঘোষ ও বাবাই ঘোষ দোষীকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তাঁদের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। নাজিমুদ্দিনের পরিবারের আইনজীবী আলি আহসান আলমগীর জানান, ‘দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির আর্জি জানিয়ে আমরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্ট সেই আর্জি মেনে দ্রুত বিচার শেষের নির্দেশ দেয়।’ আইনজীবী জানান, কৃষ্ণনগর আদালতে বিচার চলাকালীন এজলাসের বিচারক অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তখন অন্য এজলাসের বিচারক এই মামলার শুনানি করেন। আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট নাজিমুদ্দিনের পরিবার। তাদের দাবি, বিচার মিলেছে।