মুর্শিদাবাদ আর অধীর চৌধুরী। বাংলার রাজনীতিতে এই দুটি নাম কার্যত সমার্থক হয়ে উঠেছিল একটা সময়। মুর্শিদাবাদ অধীর চৌধুরীর জেলা। কয়েক বছর আগেও এই জেলায় অধীরই ছিলেন শেষ কথা। কিন্তু এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। অধীরের জেলাতেই ভয়াবহ হিংসা। সুতি, সামসেরগঞ্জে একেবারে ভয়াবহ পরিস্থিতি। একের পর এক গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস। এই হিংসা নিয়ে কী বলছেন অধীর চৌধুরী?
সূত্রের খবর, দিল্লিতে রয়েছেন অধীর চৌধুরী। সেখান থেকেই তিনি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে কথা বলেন। জেলার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন অধীর। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অধীর। অধীর জানিয়েছেন, পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিল। সেকারণেই এই ধরনের ঘটনা হয়েছে। তবে শান্তিরক্ষায় তিনি সবরকম আবেদন জানিয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন শান্তিরক্ষায় যা করতে হয় আমি করব। কংগ্রেস করবে।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, অধীর চৌধুরী এখন প্রাক্তন সাংসদ। ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন অধীর। তবে গত লোকভা ভোটের সময় থেকেই বোঝা গিয়েছিল নিজের গড়েই বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন অধীর। গোটা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের দাপটে যখন কোণঠাসা হয়েছিল কংগ্রেস তখনও দেখা যেত মুর্শিদাবাদে অধীরের প্রভাব কিছু কম নয়। কার্যত অধীরের নিজস্ব ইমেজে ভর করেই মুর্শিদাবাদে ছিল ‘অধীর কংগ্রেস’। কিন্তু সেসব আজ অনেকটাই অতীত। ক্ষয়ে গিয়েছে ক্ষমতা।
মুর্শিদাবাদে ভয়াবহ হিংসা।অধীর চৌধুরী শান্তির বার্তা দিচ্ছেন। কিন্তু শুনছেন কজন? কংগ্রেস রাস্তায় নেমে হিংসা প্রতিরোধে কতটা কাজ করতে পারছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে তৃণমূলের একাধিক নেতা, জনপ্রতিনিধি রাস্তায় বেরিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন করেছেন। কিন্তু তা কতদূর কার্যকরী হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
তবে অধীর চৌধুরী অবশ্য সর্বস্তরে শান্তির জন্য় আবেদন করছেন। রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন জেলার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে। একটাই আবেদন, শান্তি ফিরুক মুর্শিদাবাদে।
সেই সঙ্গেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
তবে এর আগে অধীর জানিয়েছিলেন, আমি ভোটে হারি বা জিতি তারা আমার ভাই বন্ধু। বন্ধুত্বের সম্পর্ক। যতদিন আমি বেঁচে থাকব, যতদিন এখানে কংগ্রেস বেঁচে থাকবে, মুর্শিদাবাদ জেলায় কোন দাঙ্গা হতে গেলে সবথেকে আগে প্রাণ দেওয়ার জন্য এগিয়ে যাব। দাঙ্গা থামাবই থামাব। যাকে খুশি ভোট দিন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মানসিকতায় আক্রান্ত হয়ে ভোটে অংশ নেবেন না।
মুর্শিদাবাদ হিংসা নিয়ে তিনি বলেন, এত শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে, তা থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য় এই ধরনের হিংসা ছড়ানো হচ্ছে।