প্রি-পেড ট্যাক্সির ডিকিতে ভুল করে ব্যাগ ছেড়ে নেমে গিয়েছিলেন যাত্রী। সেই ব্যাগের মধ্যে তাঁর যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ছাড়াও সোনার গয়না ও ল্যাপটপও ছিল। সূত্র বলতে শুধু মনে ছিল ট্যাক্সি ধরার 'সময়'। তাতেই বাজিমাত করল হাওড়া ট্রাফিক পুলিশ। তিন ঘন্টার মধ্যে যাত্রীর হারানো ব্যাগ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। ট্যাক্সিচালক নিজে এসে খোয়া যাওয়া ব্যাগটি পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে গিয়েছেন। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন, হাওড়া সিটি পুলিশের অধীনে হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের সাব-ইন্সপেক্টর অরুণ বরণ মুখোপাধ্যায়।ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল?মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া স্টেশনে। বিজয় কুমার মিশ্র নামের বাঁশদ্রোণী এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তি হাওড়া ট্রাফিক পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান যে, তাঁর একটি ব্যাগ খোয়া গিয়েছে। পুলিশকে তিনি জানান, হাওড়ায় ট্রেন থেকে নামার পর তিনি প্রিপেড ট্যাক্সি বুথ থেকে ট্যাক্সি ধরেছিলেন। বাঁশদ্রোণী এলাকায় পৌঁছে তিনি ওই ট্যাক্সিটি ছেড়ে দেন। বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পর তার মনে পড়ে যে, তিনি তাঁর ব্যাগ ট্যাক্সির মধ্যেই ফেলে এসেছেন। এমনকী, ট্যাক্সি বুথ থেকে পাওয়া স্লিপটিও ট্যাক্সিচালককে দিয়ে দিয়েছিলেন। অতএব দুপুর দেড়টা নাগাদ তিনি ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন সেই সময় টুকু ছাড়া তাঁর আর কিছু মনে ছিল না। ওদিকে ব্যাগের মধ্যে ল্যাপটপ ছাড়াও ছিল একটি সোনার মঙ্গলসূত্র ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি নথিপত্র। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্তে নামে হাওড়া সিটি পুলিশ। টক্সির নম্বর না থাকায়, প্রথমেই হোঁচট খেতে হয় পুলিশকে। তারপর প্রিপেড ট্যাক্সি বুথের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেও তেমন কোনও সূত্র মেলেনি।তারপর দুপুর দেড়টা নাগাদ যতগুলো গাড়ি ওই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে বেরিয়েছে, সেগুলোর নম্বর জোগাড় করা হয়। সেই নম্বর অনুযায়ী প্রি-পেড বুথ থেকে গন্তব্যের তথ্য খতিয়ে দেখতেই মেলে সাফল্য। চালকদের গাড়ির নম্বরের তালিকা খতিয়ে দেখা হয়। তখনই খোঁজ পাওয়া যায় সেই ট্যাক্সির, যাতে করে ওই যাত্রী বাঁশদ্রোণী এলাকায় গিয়েছিলেন। তারপরই ওই ট্যাক্সি চালক সিকান্দার যাদবের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। পুলিশের কাছ থেকে সমস্ত কিছু শুনে গাড়ির ডিকিতে খোঁজ করতে গিয়ে ওই যাত্রীর হারিয়ে যাওয়া ব্যাগ খুঁজে পান চালক। পরে সন্ধ্যায় তিনি এসে পুলিশের হাতে সেটি তুলে দেন। হারানো ব্যাগ ফিরে পেয়ে আপ্লুত বিজয়বাবু পুলিশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।