বর্ষা আসতেই জেলায় জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। মৌসুমী অক্ষরেখা ও নিম্নচাপের মিলিত প্রভাবে প্রায় গোটা রাজ্য জুড়েই এই বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। গত দু’দিন ধরে দামোদর অঞ্চলে টানা বৃষ্টি চলছে। ফলে, জলস্তর বেড়ে গিয়েছে তারওপর ঝাড়খণ্ড থেকে জলের চাপ বেড়েছে। ফলে ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
আরও পড়ুন: অকাল বৃষ্টি–ডিভিসির জলে ব্যাপক ক্ষতি আলু চাষের, কৃষকদের পাশে দাঁড়াল কৃষি দফতর
জানা যাচ্ছে, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে প্রায় ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হয়েছে। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি ও ঘাটালের বাসিন্দাদের মধ্যে। এর আগে বহুবার এই এলাকায় জল ছাড়ার জেরে বন্যা দেখা গিয়েছে। আরও সমস্যা দেখা দিচ্ছে ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট ও তিলিয়া বাঁধ থেকেও জল ছাড়ার ফলে। সেই জল এসে জমা হচ্ছে মাইথন ও পাঞ্চেতে। ফলে এই দুই জলাধারেও জলস্তর বাড়ছে। বাধ্য হয়েই সেখান থেকেও জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসি। মঙ্গলবার রাতে বরাকর উপত্যকায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। আজ বুধবার, পূর্ব বর্ধমানের বহু অংশে বৃষ্টি চলছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজ ও আগামীকাল দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় প্রশাসন ইতিমধ্যে সতর্ক হয়েছে। প্রতিটি জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও জেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষার সময়ে ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিতর্ক হয়। গতবছর সেই বিতর্ক ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও অভিযোগ করেছেন, রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি জল ছেড়ে দেয়। এর ফলে বহু এলাকা প্লাবিত হয়, ঘরবাড়ি ডুবে যায়, চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বছরও বহু পরিবারকে ত্রাণশিবিরে থাকতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ এখন আরও সতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী বহুবার জলাধার সংস্কার ও পলি তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। প্রসঙ্গত, বর্ষা শুরুতেই এত পরিমাণ জল ছাড়া হচ্ছে। এখনও বাকি রয়েছে বর্ষা। ফলে পরবর্তী সময়ে আরও প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।