আবাসের তালিকায় ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বহু জায়গায় স্বজনপোষনের অভিযোগও রয়েছে। প্রকৃত গরীব মানুষকে বঞ্চিত করে শাসকদলের নেতাকর্মীদের নাম রাখা হয়েছে তালিকায় এমন অভিযোগও উঠছে। তবে এবার এনিয়ে আচমকাই বিবেক জেগে উঠল ডায়মন্ডহারবারের দুই তৃণমূল নেতার।
তারা তালিকা থেকে নাম বাতিলের জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন বলে খবর।
মশাট গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য রাজু সরকার বলেন, ২০১৮ সালে যখন সমীক্ষার তালিকা তৈরি হয়েছিল তখন আমাদের বাড়ি একেবারে ভাঙাচোরা ছিল। সেই সময় আমার নাম ছিল তালিকায়। এদিকে বর্তমান তালিকাতেও দেখি আমার নাম চলে এসেছে। কিন্তু আমি তো ঘর করে নিয়েছি। সেকারণে আমি নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। যারা যোগ্য ব্যক্তি তারা যাতে ঘর পায় সেটাই চাইছি।
রসুলডাঙা পঞ্চায়েতের অপর এক সদস্য এনায়েত হোসেন মোল্লা বলেন, আমি পাকা বাড়ি করেছি। তবে এখানে অনেক গরীব মানুষ রয়েছেন। আমি চাই তারা ঘর পান। যাদের নেই তাদের হোক। ডায়মন্ডহারবার ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা ওই দুই তৃণমূল নেতা। তাদের নাম ছিল তালিকায়। এবার তারা নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জানালেন।
ব্লক প্রশাসনের সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করেছে। তাদের দাবি আমরা পাকা বাড়ি করে নিয়েছি। আমাদের নাম বাদ দেওয়া হোক আবাসের তালিকা থেকে।
তবে তৃণমূল নেতাদের এই জাগ্রত বিবেক নিয়ে ইতিমধ্য়েই চর্চা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত এই ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর সাংসদ এলাকায় তৃণমূলের দুই নেতার এই আবেদনকে ঘিরে অনেকেই মুচকি হাসছেন।
অনেকের প্রশ্ন জাগ্রত বিবেক নাকি দলের অন্দরে তোপের মুখে পড়ে পরের বার টিকিট হারাতে হতে পারে সেই আশঙ্কাতেই ঘর ছাড়ার আর্জি জানালেন দুই তৃণমূল নেতা? তবে এবার এই দুই তৃণমূল নেতার দেখাদেখি আর কারা এভাবে আবেদন করে তালিকা থেকে নাম বাদ দেন সেটাও দেখার।
তবে আবাস নিয়ে দুর্নীতি বাংলায় নতুন কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে বাংলায় বার বারই নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে সেকথা কার্যত স্বীকার করে নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আবাস যোজনার ভুরি ভুরি দুর্নীতি নিয়ে আদালতে নালিশ করেছিলেন ক্যানিংয়ের ইটখোলা পঞ্চায়েতের হেড়োভাঙা গ্রামের পাঁচ বাসিন্দা। সেখানে তাঁরা একের পর এক অভিযোগ করেছিলেন। তার মধ্য়ে অন্য়তম ছিল ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
সম্প্রতি এই মামলার শুনানি ছিল। আর সেখানে আবাস যোজনা নিয়ে অনিয়মের বিষয়টি কার্যত মেনে নিয়েছিল রাজ্য় সরকার। কার্যত আর্থিক তছরূপের বিষয়টি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারের দাবি, মামলাকারীদের দাবির সত্যতা রয়েছে। অনুসন্ধান করে দেখা হয়েছে। কার্যত অভিযোগ যে সত্য সেটা মেনে নিয়েছিল সরকার।