বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন প্রায় ৩৫ বছর আগে। তারপর থেকে এখানেই থেকে গিয়েছেন। বিয়ে করেছেন, সংসার পেতেছেন। এখন তাঁর বয়স ৬০ পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, আজ পর্যন্ত ভারতের ভোটার হতে পারেননি। অথচ, প্যান কার্ড, আধার কার্ড তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসের এক স্থানীয় নেতা নাকি তাঁকে কথা দিয়েছিলেন, ভোটার কার্ড তৈরি করিয়ে দেবেন। কিন্তু, মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়েও সেই কথা রাখেননি ওই তৃণমূল নেতা!
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ। এখানকার ভোটার তালিকাতেই দেখা গিয়েছে 'বাংলাদেশি' নিউটন দাসের নাম। তাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গরমিলে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এবার সেই কাকদ্বীপেরই এক তৃণমূল নেতাকে কাঠগড়ায় তুললেন প্রায় ৩৫ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে বসবাস শুরু করা অর্জুন দাস। যাঁর অভিযোগ প্রতিবেদনের একেবারে শুরুতেই তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে - অর্জুন বর্তমানে কাকদ্বীপের শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব গঙ্গাধরপুরের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী ভারতীয়। অর্জুনের দাবি, ১২ বছর আগে তাঁকে ভোটার কার্ড তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এলাকার তৃণমূল নেতা কাশীনাথ বিশ্বাস। এর জন্য অসুস্থ স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে তিনি কাশীনাথকে মোটা টাকা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন অর্জুন। কিন্তু, বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেই কাঙ্ক্ষিত ভোটার কার্ড তিনি পাননি।
কাশীনাথ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পালটা দাবি, তিনি অর্জুনের কাছ থেকে কখনও কোনও টাকা নেননি। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কাশীনাথ নাকি স্থানীয় তৃণমূল নেতা দেবাশিস দাসের অনুগামী। দেবাশিস জানিয়েছেন, তিনি অন্তত অর্জুন নামে কাউকে চেনেন না। তবে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দেবাশিস। জানিয়েছেন, পুলিশকে সবটা জানানো হবে। সত্যিই যদি ওই বৃদ্ধের থেকে কেউ টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে তা তাঁকে ফেরত দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে।
অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ - শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের 'বড় মাথারা'ই নাকি টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশিদের নাম এলাকার ভোটার তালিকায় তুলছে। তাই, সেই মাথাদের না ধরা হলে এই 'অনুপ্রবেশ' থামবে না।