বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর 'বন্ধু' মহম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের স্বার্থে অনেক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করেছেন বলে দাবি করেন অমর্ত্য সেন। তবে ইউনুসকে এখনও অনেক কিছু করতে হবে বলে মত অমর্ত্য সেনের। বার্তাসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে 'বাঙাল' অমর্ত্য সেন বলেন, 'বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। আমি নিজের বাঙালি সত্ত্বাকে প্রবল ভাবে ধারণ করি বলেই সেটা হয়েছে।' উল্লেখ্য, ঢাকায় শৈশব কাটানো অমর্ত্য সেনের স্কুলশিক্ষা শুরু হয়েছিল সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে। পরে তিনি শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেছিলেন। নিজের 'আদি বাড়ির' বর্তমান পরিস্থিতিতে তাই উদ্বেগ প্রকাশ অমর্ত্য সেনের।
বাংলাদেশে নিজের জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন অমর্ত্য সেন। সেই স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন, 'ঢাকায় আমার স্কুল শিক্ষার সূচনা হয়েছিল। সেখানে অনেকটা সময় আমি কাটিয়েছি। এছাড়া মানিকগঞ্জে আমার পৈতৃক বাড়িতে প্রায়ই যেতাম। আমার মামাবাড়ি ছিল বিক্রমপুরে। সেখানেও নিয়মিত যেতাম। ব্যক্তিগত ভাবে এই সব জায়গার গুরত্ব রয়েছে আমার কাছে। তাই অনেকের মতো আমিও চিন্তিত। বাংলাদেশের সামনে যে চ্যালেঞ্জ এসেছে, তা তারা কীভাবে মোকাবিলা করবে সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমি।'
এদিকে ইউনুসকে নিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, 'ইউনুস আমার অনেক পুরনো একজন বন্ধু। তাঁর সামর্থ্য রয়েছে। আমি জানি। বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন এর আগেও। ইউনুসের ওপর আমার আস্থা রয়েছে। এখন কেউ যদি হঠাৎ করে কোনও এক দেশের প্রধান হয়ে যান, তাহলে তাঁকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে। সেখানে বিভিন্ন ইসলাপন্থী দল রয়েছে, হিন্দুদেরও বিভিন্ন পক্ষ রয়েছে।'
উল্লেখ্য, বিগত দিনে বাংলাদেশে ক্রমেই বেড়েছে মৌলবাদ। সংস্কারের নামে গদি আঁকড়ে বসে আছেন মহম্মদ ইউনুস। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে চলেছে। এই আবহে রমজানের সময় বাংলাদেশের আম জনতার পকেটে আগুন। বাংলাদেশের অর্থনীতির হাল সেই অর্থে ফেরাতে পারেননি নোবেলজয়ী ইউনুস। এই সবের মাঝেই সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকেই। ইউনুস মুখে শান্তি ফেরানোর কথা বললেও তা প্রতিষ্ঠা করতে কার্যত ব্যর্থ। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক হিংসার পাশাপাশি খুন, জখম, রাহাজানি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। সঙ্গে অনেক নারী নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। যার প্রতিবাদে বাংলাদেশের স্কুল ছাত্রীরা পর্যন্ত সরব হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের সেনা প্রধান ওয়াকার উজ-জামানও সরকারের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন। এদিকে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ায় বিএনপিও তোপ দাগতে শুরু করেছে ইউনুসের সরকারের দিকে।