জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণকে ৫৬ ভোগ নিবেদন করার প্রথার পেছনে একটি বিশেষ পৌরাণিক ঘটনা জড়িত আছে। এই প্রথাটির মূল কারণ হল ভক্তদের পক্ষ থেকে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। তবে গোকূলের এই কাহিনি থেকেই ৫৬ ভোগ নিবেদনের রীতি শুরু।
আরও পড়ুন - জন্মাষ্টমী তিথি এই বছর কতক্ষণ? কখন গোপালের পুজো করা সর্বোত্তম? কী বলছে পঞ্জিকা
নেপথ্যের পৌরাণিক কাহিনী
গোকুলে একবার ব্রজবাসীরা বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্রকে সন্তুষ্ট করতে একটি বিশাল পুজোর আয়োজন করেছিল। বালক কৃষ্ণ তখন তাদের বোঝালেন যে, ইন্দ্রের পুজো করার চেয়ে গোবর্ধন পর্বতের পুজো করা উচিত। কারণ এই পর্বত তাদের ফল, সবজি এবং গবাদি পশুর জন্য খাবার সরবরাহ করে। কৃষ্ণের কথা শুনে ব্রজবাসীরা ইন্দ্রের পুজো বন্ধ করে গোবর্ধন পর্বতের পুজো শুরু করল। এতে দেবরাজ ইন্দ্র অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হলেন। ক্রোধে ইন্দ্রদেব গোকুলে প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু করলেন, যার ফলে গ্রামটি বন্যায় ভেসে যাওয়ার উপক্রম হল। তখন ব্রজবাসীদের রক্ষা করার জন্য শ্রীকৃষ্ণ তাঁর কনিষ্ঠ আঙুলে গোবর্ধন পর্বত তুলে নিলেন। সেই পর্বতের নিচে গোকুলের সমস্ত মানুষ ও পশুপাখি সাত দিন ধরে আশ্রয় নিয়েছিল। এই সাত দিন শ্রীকৃষ্ণ কিছুই আহার করেননি।
আরও পড়ুন - খেল দেখাবেন শনিদেব! বুধের সঙ্গে নবম যোগে ভাগ্য ঘুরছে ৩ রাশির, উড়বে সুখের ফানুস
কেন ৫৬ ভোগ দেওয়ার নিয়ম?
সাধারণত মা যশোদা প্রতিদিন আটবার করে কৃষ্ণকে খাওয়াতেন। সেখানে সাতদিন খাবার না খেয়ে থাকলে কোন মায়ের না মন কাঁদে! সাত দিন ধরে তিনি অভুক্ত থাকায়, এই সময়ের খাবারের হিসাব করে ব্রজবাসীরা তাঁর জন্য সাত আষ্টে ৫৬ ধরনের সুস্বাদু পদ তৈরি করে। এই ৫৬টি পদই পরে ৫৬ ভোগ নামে পরিচিত হয় এবং সেই থেকে এই বিশেষ দিনে শ্রীকৃষ্ণকে ৫৬ ভোগ নিবেদনের প্রথা প্রচলিত হয়।