জন্মাষ্টমীর মতো পবিত্র উৎসবে পেঁয়াজ ও রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলার নেপথ্যে রয়েছে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাস। পাশাপাশি আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের নীতির ওপর ভিত্তি করে এই নিয়ম গড়ে উঠেছে।
খাবারের তিন ভাগ
হিন্দুধর্ম ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে, খাদ্যকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়: সাত্ত্বিক, রাজসিক এবং তামসিক।
- সাত্ত্বিক খাদ্য: এই ধরনের খাবার শরীর ও মনকে শান্ত ও পবিত্র রাখে। এটি আধ্যাত্মিক উন্নতিতে সাহায্য করে। ফল, সবজি, দুধ, ঘি, ডাল ইত্যাদি সাত্ত্বিক খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত।
- রাজসিক খাদ্য: এই খাবারগুলি উত্তেজনা, আবেগ এবং কামনা-বাসনা বাড়ায়। পেঁয়াজকে রাজসিক খাদ্য হিসেবে ধরা হয়।
- তামসিক খাদ্য: এই খাবারগুলি অলসতা, নেতিবাচকতা, ক্রোধ এবং মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। রসুনকে তামসিক খাদ্য হিসেবে গণ্য করা হয়।
জন্মাষ্টমীর সময় মন ও শরীরকে পবিত্র রাখতে এবং শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি ও একাগ্রতা বাড়াতে সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ করা হয়। পেঁয়াজ ও রসুন খেলে মন চঞ্চল হয় এবং আধ্যাত্মিক সাধনায় বাধা সৃষ্টি হয় বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন - জন্মাষ্টমী তিথি এই বছর কতক্ষণ? কখন গোপালের পুজো করা সর্বোত্তম? কী বলছে পঞ্জিকা
পৌরাণিক কাহিনিতে পেঁয়াজ ও রসুনের উৎপত্তি
কিছু লোককথায় বলা হয়, পেঁয়াজ ও রসুনের উৎপত্তি অসুরদের রক্ত থেকে হয়েছে। সমুদ্র মন্থনের সময় রাহু নামক অসুর দেবতাদের সঙ্গে মিশে অমৃত পান করেছিল। যখন ভগবান বিষ্ণু জানতে পারলেন, তখন তিনি সুদর্শন চক্র দিয়ে রাহুর মাথা কেটে ফেলেন। রাহুর দেহ থেকে রক্ত মাটিতে পড়েছিল এবং সেই রক্ত থেকে পেঁয়াজ ও রসুনের উৎপত্তি হয়েছিল। যেহেতু এটি অসুরদের অংশ, তাই একে অপবিত্র বা অশুচি হয়।
আরও পড়ুন - খেল দেখাবেন শনিদেব! বুধের সঙ্গে নবম যোগে ভাগ্য ঘুরছে ৩ রাশির, উড়বে সুখের ফানুস
পবিত্রতা নষ্ট ছাড়া আর কী হয়?
পূজা বা উপবাসের সময় শরীর ও মনকে শুদ্ধ রাখা অপরিহার্য। পেঁয়াজ ও রসুনের তীব্র গন্ধ এবং বৈশিষ্ট্য মনকে জাগতিক বিষয়ের দিকে আকৃষ্ট করে। এই ধরনের খাবার খেলে মন ঈশ্বর থেকে দূরে সরে যেতে পারে। তাই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এবং বিশেষ করে উপবাসের দিনে এই খাবারগুলি সম্পূর্ণ বর্জন করা হয়।