মেঘালয় হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এবার রাজধানীতে।ফের প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। যদিও, ওই ব্যক্তির মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত মনে করা হয়েছিল যে ইলেকট্রিক শকের কারণে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু পরবর্তী একটি ইনস্টাগ্রাম চ্যাট তদন্তে মোড় ঘুরিয়ে দেয় গোটা ঘটনার। উঠে আসে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড। যেখানে জড়িয়ে বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্র।
হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির উত্তম নগর এলাকায় ৷গত ১৩ জুলাই দিল্লির স্ত্রী সুস্মিতা নিজের স্বামী করণ দেবকে দিল্লির মাতা রূপরানি ম্যাগো হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে গিয়ে সুস্মিতা দাবি করে, তাঁর স্বামী করণ আচমকা ইলেকট্রিক শক লেগেছে। হাসপাতাল থেকে করণকে মৃত ঘোষণা করে। করণের পরিবার ছেলের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে ধরে নেয়। এবং তারা ময়নাতদন্ত না করার সিদ্ধান্ত নেয়।পরিবার ময়নাতদন্তে সম্মতি না দিলেও দিল্লি পুলিশ তাতে জোর দেয়। পুলিশের সন্দেহ হয় যে, ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নয়। এরপরই করণের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় দীন দয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে।
আরও পড়ুন-কোল্ডপ্লে-র কনসার্টে HR হেডের সঙ্গে পরকীয়া! ভাইরাল হতেই ইস্তফা সিইও-র
এই ঘটনার তিন দিন পর, গত ১৬ জুলাই একটি ইনস্টাগ্রাম চ্যাট গোটা তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। মৃত করণের ছোট ভাই কুণাল দেব একটি ইনস্টাগ্রাম চ্যাট স্ক্রিন রেকর্ডিং করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। যেটা সুস্মিতা ও করণের খুড়তুতো ভাই রাহুলের চ্যাট ছিল। চ্যাটে লেখা ছিল, ১২ জুলাই রাতে করণের খাবারে ১৫টি ঘুমের ওষুধ মেশানো হয়েছিল। কিন্তু ঘুমের ওষুধ কাজ না করায় সুস্মিতা ঘাবড়ে যায়। এই তথ্য সামনে আসার পর পুলিশ ঘটনাটিকে পরিকল্পিত খুন হিসাবে তদন্ত শুরু করে। ওই চ্যাট থেকে সাফ বোঝা যায় যে, সুস্মিতা ও দেওর রাহুল সম্পর্কে ছিল। যার কারণে তারা করণকে খুন করে।
চ্যাটে সুস্মিতা রাহুলকে লেখে, 'দেখো তো, ওষুধ খাওয়ার পর কতক্ষণে মৃত্যু হয়। তিন ঘণ্টা হয়ে গেছে, বমি নেই, কিছুই না... আর মৃত্যু তো হয়নি। এখন কী করব, কিছু সাজেস্ট করো।' উত্তরে রাহুল বলে, 'কিছু বুঝতে না পারলে, ইলেকট্রিক শক দাও।' তখন সুস্মিতা বলে, 'শক দেওয়ার জন্য কীভাবে বাঁধব?' জবাবে রাহুল লেখে, 'টেপ দিয়ে।' সুস্মিতা বলে, 'ও ধীরে ধীরে নিশ্বাস নিচ্ছে।' তখন রাহুল বলে, 'যা কিছু ওষুধ আছে সব দিয়ে দাও।' এরপর সুস্মিতা লেখে, 'মুখ খুলছে না। জল ঢালতে পারি, কিন্তু ওষুধ দিতে পারছি না। তুমি এসো, একসঙ্গে মিলে হয়তো পারব।' এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুসারে, পুলিশের জেরায় সুস্মিতা ও রাহুল নিজেদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘুমের অসুধ খাওয়ানোর পর করণকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে খুন করা হয়। এবং পুরো ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসাবে সাজানো হয়। মনে করা হচ্ছে, করণের আঙুলে ইলেকট্রিক শক দিয়ে খুন করা হয়।
আরও পড়ুন-কোল্ডপ্লে-র কনসার্টে HR হেডের সঙ্গে পরকীয়া! ভাইরাল হতেই ইস্তফা সিইও-র
খুনের পর সুস্মিতা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে বলে, করণের ইলেকট্রিক শক লেগেছে। এরপরেই পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ফ্ল্যাটে ছুটে যান ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে করণকে মৃত ঘোষণা করা হয়।ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্ত রাজি রয়েছে।