মার্কিন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (ডিইএ) একটি আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্রের পর্দাফাঁস করেছে সম্প্রতি। সেই অভিযানে ধরা পড়েছে কুখ্যাত ইন্দো-কানাডিয়ান গ্যাংস্টার ওপিন্দর সিং সিয়ান ওরফে 'থানোস'। সিয়ানের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে আমেরিকায় ফেন্টানিল ও মেথামফেটামিন চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। গত ২৭ জুন অ্যারিজোনা থেকে সিয়ানকে গ্রেফতার করা হয়। সে অস্ট্রেলিয়ায় মেথ চোরাচালান এবং কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল মাদক পাচারের সাথে জড়িত ছিল।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ডিইএ'র তদন্তে উঠে এসেছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি), মেক্সিকোর সিনালোয়া কার্টেল এবং পাকিস্তানের আইএসআই সমর্থিত গ্যাং ব্রাদার্স কিপার্সের মাদক সরবরাহকারীদের সঙ্গে সিয়ানের যোগাযোগ রয়েছে। ব্রাদার্স কিপার্স গ্যাং মূলত পঞ্জাবের যুবকদের নিয়ে গঠিত একটি গ্যাং। এর বেশিরভাগ সদস্য কানাডার নাগরিক। তারা বিভিন্ন সময়ে খলিস্তানপন্থী কার্যকলাপে সক্রিয় থেকেছে। এই চক্রটি কোকেন, এমডিএমএ, হেরোইন, ফেন্টানিল এবং অস্ত্র চোরাচালানের পাশাপাশি হত্যা, চাঁদাবাজি এবং ডাকাতির সাথে জড়িত।
চিন থেকে ফেন্টানিল পাচার
২০২৩ সালে সিয়ান ভ্যাঙ্কুভারে ডিইএর গোপন এজেন্ট 'কুইন' এবং চিনা গ্যাং ম্যান পিটার পেং ঝৌয়ের মধ্যে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিল। ঝৌ সেই বৈঠকে ছদ্মবেশী মার্কিন সিক্রেট এজেন্টকে জানিয়েছিল যে, সে চিন থেকে ফেন্টানিল আমদানি করতে পারে এবং ভ্যাঙ্কুভার হয়ে প্রতি মাসে ১০০ কেজি ফেন্টানিল লস লস অ্যাঞ্জেলেসে পাচার করতে পারে। এ কাজে সে তার ট্রাকিং কোম্পানিকে ব্যবহার করে করত। ডিইএ'র তদন্তে জানা গেছে যে সিয়ান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় চারবার মেথ সরবরাহ করেছিল, যার পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
ওপিন্দর সিং সিয়ান 'ওপি', 'থানোস' এবং 'কেন' এর মতো নামে পরিচিত। আগামী ২১ জুলাই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে হাজির করা হবে তাকে। তার বিরুদ্ধে মেথামফেটামিন রফতানির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে এবং বর্তমানে সে মার্কিন হেফাজতে রয়েছে। ২৯ পাতার হলফনামায় বলা হয়েছে, তুরস্ক, দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, হংকং ও কানাডা জুড়ে এই মাদক নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি রয়েছে। দুবাইভিত্তিক আইরিশ অপরাধী পরিবার 'কিনাহান' ও ইরানি সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে সিয়ানের। তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে ডিইএ ২০২২ সালে তদন্ত শুরু করে এবং সিয়ানের ওপর তখন থেকেই নজরদারি চলছিল। ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি বলেছে যে সিয়ান আইএসআই এবং চিনা মাদক সরবরাহকারীদের মধ্যে প্রধান মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছিল। সংস্থাগুলো বলছে, ভারতে এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ৪০ জন ইন্দো-কানাডিয়ানকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা পঞ্জাব, দিল্লি ও কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপে মদত দেয়।