ওয়াশিংটনের পর এবার শিকাগো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরেও সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন এই পরিকল্পনায় কাজও শুরু করেছে।
‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিকাগোতে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং অবৈধ অভিবাসন রুখতে কড়া এই পদক্ষেপ করে বলে মনে করা হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের দাবি, সে দেশের বড় শহরগুলিতে ক্রমশ বাড়ছে অপরাধ এবং অবৈধ অভিবাসন। তা রুখতেই সামরিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিকাগোতে কয়েক হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত শুক্রবারই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, 'শিকাগোর অবস্থা এখন জগাখিচুড়ি হয়ে রয়েছে। শহরের মেয়র যে অরাজগতা তৈরি করে রেখেছে, তা কল্পনাতীত। আমরা তা ঠিক করে দেব।' শনিবার পেন্টাগন একটি বিবৃতিতে জানায়, ‘আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম এখনই প্রকাশ্যে আনছি না। তবে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা এবং কর্মীদের সুরক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই মতো আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।’ তবে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন-মর্মান্তিক পরিণতি! নায়াগ্রা জলপ্রপাতে গিয়ে মৃত্যু বিহারের বাসিন্দার, কী ভাবে?
অন্যদিকে, ইলিনয় প্রদেশের গভর্নর জেবি প্রিটজকার এবং শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন।তাঁরা দাবি করেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় বাহিনীই যথেষ্ট। ইলিনয়ের ডেমোক্র্যাট গভর্নর এক বিবৃতিতে বলেন, শিকাগোতে সামরিক সহায়তার প্রয়োজন আছে বলে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে অঙ্গরাজ্যকে কোনও ভাবে অবহিত করা হয়নি। তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে ন্যাশনাল গার্ড বা অন্য কোন বাহিনী মোতায়েনের মতো জরুরি অবস্থা নেই।' প্রিটজকার আরও বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন, সেনাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ পরিবারগুলোর দুঃখ-কষ্ট থেকে মনোযোগ সরাতে চাইছেন।' এদিকে শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন বলেন, শহর প্রশাসন এ ধরনের অবৈধ সেনা মোতায়েন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তাঁর কথায়, 'প্রেসিডেন্টের এ ধরনের পদক্ষেপ সমন্বয়হীন, অপ্রয়োজনীয় এবং অযৌক্তিক।' মেয়র আরও জানান, গত এক বছরে শিকাগোতে হত্যাকাণ্ড ৩০ শতাংশ, ডাকাতি ৩৫ শতাংশ এবং গুলির ঘটনা প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে।
আরও পড়ুন-মর্মান্তিক পরিণতি! নায়াগ্রা জলপ্রপাতে গিয়ে মৃত্যু বিহারের বাসিন্দার, কী ভাবে?
কয়েকদিন আগেই ট্রাম্পের নির্দেশে ওয়াশিংটনে মোতায়েন করা হয়েছে ন্যাশনাল গার্ড। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ডেমোক্রাটদের দখলে থাকা এই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সাধারণ মানুষ। এর জেরেই স্থানীয় পুলিশের ক্ষমতা কেড়ে রাজধানীতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। এর আগে গত জুনে ফেডারেল অভিবাসন বিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভ চলাকালে ট্রাম্প সে অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট গভর্নরের বিরোধিতা সত্ত্বেও লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭০০ মেরিন ও ৪ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য পাঠান।