ভারতীয় বিবাহ আনন্দ এবং পবিত্র অনুষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, শেষকৃত্য হল দুঃখজনক উপলক্ষ্য। তাই বিয়ের মতো খুশির অনুষ্ঠান আর মৃত্যুর মতো শোকের অনুষ্ঠান একই জায়গায় হওয়া দুৰ্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু মালেশিয়ার বসবাসকারী দুই পরিবার বিশ্বকে দেখিয়ে দিল, পারস্পরিক সম্মান জায়গায় এসব বিশ্বের অনেক ঊর্ধ্বে।
আরও পড়ুন-মারাঠি সম্প্রদায়কে ‘অপমান’! মুম্বইয়ে দোকানের মালিককে বেধড়ক মারধর এমএনএস কর্মীদের
মালয়েশিয়ার নেগেরি সেমবিলান রাজ্যের ছোট শহর তামপিন। গত ৫ জুলাই সেই শহরের রাস্তায় দেখা গেল এক বিরল দৃশ্য। রাস্তার একপ্রান্তে চলছিল ভারতীয় বিয়ের অনুষ্ঠান, আবার অন্যপ্রান্তে চিনা পরিবারে শোকযাত্রা।তেমনি একপাশে বাজছিল সানাই, অন্যপাশে চলছিল শোকসংগীত। সম্পূর্ণ আলাদা দুটি সংস্কৃতি, সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি উপলক্ষ। তবু কোনও অশান্তি নয় বরং দুই পরিবারের মধ্যে দেখা গেল এক অন্যরকম বোঝাপড়া।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, স্থানীয় এক চিনা বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশনপার্টির এক রাজনীতিবিদের মা সম্প্রতি প্রয়াত হন। তাঁর শেষকৃত্য ছিল ওই দিনই। আর রাস্তার অপর পাশে একটি কমিউনিটি হল ভাড়া করে বিয়ের আয়োজন করেছিল এক ভারতীয় পরিবার। দুই অনুষ্ঠান প্রায় একই সময়ে চললেও কেউ কাউকে অসুবিধায় ফেলেনি।চিনা রাজনীতিবিদ ওয়াং জানান, তিনি চাইতেন না তাঁর মায়ের মৃত্যু অন্য কারও আনন্দের দিনে বাধা হয়ে দাঁড়াক। তাই তিনি নিজেই ভারতীয় পরিবারটিকে জানিয়ে দেন যে, ৯৪ বছর বয়সে তাঁর মায়ের মৃত্যু শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছিল এবং চিনা সংস্কৃতি অনুযায়ী, এত দীর্ঘ জীবনকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেই ধরা হয়।তিনি ভারতীয় পরিবারকে আরও জানান যে সন্ধ্যার পর কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে না, তাই বিয়ের আয়োজন নির্বিঘ্নে চলতে পারে।
আরও পড়ুন-মারাঠি সম্প্রদায়কে ‘অপমান’! মুম্বইয়ে দোকানের মালিককে বেধড়ক মারধর এমএনএস কর্মীদের
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম চায়না প্রেস জানিয়েছে, অন্যদিকে ভারতীয় পরিবারও যথেষ্ট সংবেদনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামল দিয়েছে। তারা গানবাজনা বন্ধ করে দেয়, গাড়িগুলি দূরে সরিয়ে দেয় যাতে শবযাত্রার পথে কোনও অসুবিধা না হয়। অনেক সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করা হয়, বিয়ের মতো আনন্দের অনুষ্ঠান আর মৃত্যুর মতো শোকের অনুষ্ঠান একই জায়গায় পাশাপাশি হওয়া অশুভ। কিন্তু তামপিনে এই দুই পরিবার দেখিয়ে দিল, পারস্পরিক সম্মান আর সহানুভূতির জায়গায় এসব কুসংস্কার কোনও বাধা নয়।