ভারতের মা-বোনেদের মাথা থেকে সিঁদুর মুছে দেওয়ার পরিণতি কী হতে পারে, সেটা টের পেয়ে গেল জঙ্গিরা। হুংকার দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর (মৃতদের সকলেই পুরুষ এবং ধর্ম জিজ্ঞাসা করে অনেককে মারা হয়েছে) পরে ‘সন্ত্রাসবাদকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে ফ্রি হ্যান্ড দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জঙ্গিদের প্রতিটি সংগঠন জেনে গিয়েছে যে আমাদের বোন-মেয়েদের মাথা থেকে সিঁদুর মুছে দেওয়ার পরিণতি কী হয়। অপারেশন সিঁদুর নেহাত একটা নাম নয়, এটা দেশের কোটি-কোটি মানুষের মনের কথা।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা আমাদের বোনেদের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল। তাই ভারত জঙ্গিদের সদর দফতর উপড়ে ফেলে দিয়েছে। ভারতের এই হামলায় ১০০-র বেশি জঙ্গিকে খতম করে দেওয়া হয়েছে।’
‘অপারেশন সিঁদুর’-র সাফল্য?
৯টি জঙ্গি শিবির ধ্বংস: পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের ন'টি গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে। যে তালিকায় লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গি শিবিরও আছে। স্রেফ একটা রাতেই খতম করে দেওয়া হয়েছে একাধিক শীর্ষ জঙ্গিনেতাকে, যারা ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্ট’-এ ছিল।
আরও পড়ুন: পরমাণু অস্ত্রের ‘ব্ল্যাকমেল’ সইব না, জঙ্গি ও পাককে একই চোখে দেখব, ওয়ার্নিং মোদীর
১১টি পাকিস্তানি বায়ুঘাঁটিতে হামলা: প্রাথমিকভাবে অপারেশন সিঁদুরে শুধুমাত্র জঙ্গিদের নিশানা করেছিল ভারত। কিন্তু পাকিস্তান ভারতের সাধারণ মানুষ এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তারপরই রুদ্ররূপ ধারণ করে ভারতের সামরিক বাহিনী। রাফিকি, চাকলালা, রহিম ইয়ার খান, সুক্কুর, শিয়ালকোট-সহ পাকিস্তানের ১১টি বায়ুঘাঁটিতে প্রত্যাঘাত চালায়।
আরও পড়ুন: টার্গেটে হিট করা আমাদের কাজ, মৃতদেহের ব্যাগ গোনা নয়, পাক সেনার মৃত্যুতে বলল ভারত
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ‘৯-১০ মে’র মধ্যবর্তী সময় বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে একটি অপারেশনেই কোনও পরমাণু শক্তিধর দেশের ১১টি বায়ুঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে ভারত। ওই এক অপারেশনেই পাকিস্তানি বায়ুসেনার ২০ শতাংশ সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোলারি বায়ুঘাঁটিতে বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে পাকিস্তানি বায়ুসেনার স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধবিমানে বড় ক্ষতি হয়েছে।' সেইসঙ্গে কয়েকটি যুদ্ধবিমানকেও ‘মেরে ফেলা হয়েছে’।
অর্থাৎ পাকিস্তানের এমন হাল করে দেওয়া হয় যে আক্রমণ তো দূর অস্ত, ভারত ‘অল-আউট’ প্রত্যাঘাত করলে নিজেদের সম্ভ্রমও রক্ষা করতে পারত না। হয় লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যেতে হত অথবা অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হত। তবে পাকিস্তানের পরমাণু ভাণ্ডারে ভারত নিশানা করেনি বলে জানিয়েছেন এয়ার অপারেশনসের ডিরেক্টর জেনারেল এয়ার মার্শাল একে ভারতী।
আরও পড়ুন: করাচিতেও হামলা চালাতে তৈরি ছিলাম, হুংকার ভারতীয় নৌসেনার, ভয়ে লেজ গুটিয়ে ছিল পাক
ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জয়: অপারেশন সিঁদুরের পরে টানা তিনদিন ভারতে একের পর এক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের বহুস্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, আকাশের মতো বিভিন্ন সিস্টেমের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছে পাকিস্তান।