সাতদিন পরও তেলাঙ্গানার শ্রীশৈলম লেফট ব্যাঙ্ক কানাল সুড়ঙ্গে আটকে থাকা আট শ্রমিককে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। যত সময় যাচ্ছে, তত পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে, মানছেন উদ্ধারকারীরা। শ্রমিকদের জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ৫০০ জনেরও বেশি উদ্ধারকারী। সেনাবাহিনী-সহ একাধিক সংস্থা কয়েকদিন ধরে টানা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও কোনও সাফল্য পাওয়া যায়নি। জানা গিয়েছে, বর্তমানে উদ্ধারকারী দলগুলি একটি টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) দিয়ে কেটে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য পথ তৈরি করছে।
উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের উদ্ধারকাজে যুক্ত ছিলেন এমন বেশ কয়েকজন উদ্ধারকারীর দাবি, সিল্কিয়ারার মতো পরিস্থিতি নয়। তেলাঙ্গানার সুড়ঙ্গের পরিস্থিতি আরও কঠিন। সুড়ঙ্গের ভিতরে উদ্ধারকাজকে আরও কঠিন করে তুলেছে জল এবং কাদা। জল পাম্প করে বের করা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কাদা পরিষ্কার করতে গিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে। সিল্কিয়ারায় অগার যন্ত্র ব্যবহার করে শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা হয়েছিল।
কিন্তু এখানে সেই পরিস্থিতিও নেই বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে জল ছিল না। কিন্তু তেলাঙ্গানার সুড়ঙ্গে পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে জল এবং কাদা। জল পাম্প করে বের করা হচ্ছে। আবার জলে ভরে যাচ্ছে সুড়ঙ্গ। ফলে এক পা এগিয়েও আবার পিছিয়ে আসতে হচ্ছে। এক উদ্ধারকারীর কথায়, ‘সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে শ্রমিকদের গতিবিধি জানা যাচ্ছিল। কিন্তু এখানে পুরোপুরি নিস্তব্ধতা। ফলে শ্রমিকদের অবস্থান কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছেন, তা বুঝে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।’
অন্যদিকে, অত্যন্ত উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন আটকে পড়া আট শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বারবার উদ্ধারতাজেক অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইছেন প্রশাসনের কাছে। আটকে পড়া এক শ্রমিকের আত্মীয় গুরপ্রীত সিং দাবি করেছেন, তাঁরা উদ্ধারকাজ সম্পর্কে কোনও তথ্য পাচ্ছেন না। তাঁদের পরিবারের একজন সদস্য সুড়ঙ্গে প্রবেশের জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন কিন্তু তা খারিজ করে দেওয়া হয়। সুড়ঙ্গে যে আটজন শ্রমিক আটকে আছেন, তাঁদের মধ্যে দু'জন ইঞ্জিনিয়ার, দু'জন অপারেটর এবং চারজন ঝাড়খণ্ডের ঠিকা শ্রমিক।
এদিকে, শ্রমিকদের উদ্ধারের পরেই যথাযথ চিকিৎসার জন্য সুড়ঙ্গের বাইরেই সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিম মোতায়েন করা হয়েছে। নগরকুর্নুলের পুলিশ সুপার বৈভব গায়কোয়াড় বলেন, এনডিআরএফ, সেনাবাহিনী, সিঙ্গারেনি কোলিয়ারি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার সকালে একটি দল সুড়ঙ্গের ভিতরে গিয়েছিল। জল এবং ধ্বংসাবশেষ সরানোর প্রক্রিয়াও একই সঙ্গে চলছে। তিনি আশাবাদী, সন্ধ্যার মধ্যে বেশিরভাগ কাদা সরিয়ে ফেলা হবে।