সুপ্রিম কোর্টে বড় স্বস্তি অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদের।‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট করেছিলেন ওই অধ্যাপক। সোমবার সেই মামলায় নিম্ন আদালতকে চার্জ গঠন না করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
গত ১৮ মে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দায়ের হওয়া দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হওয়া আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে। যদিও গ্রেফতারের তিন দিন পর জামিন পান অধ্যাপক। সেই মামলা গড়িয়েছে শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। তবে সোমবার নিম্ন আদালতকে এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চের তরফে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা না হয়। এদিন হরিয়ানা পুলিশের বিশেষ তদন্ত দলকে (সিট) জানায়, তারা অধ্যাপকের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলার ক্লোজার রিপোর্ট দাখিল করেছে। অন্যদিকে, আলি খান মাহমুদাবাদের পক্ষে উপস্থিত হয়ে সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক যে পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়া মন্তব্যের জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ১৫২ ধারা প্রয়োগ করেছে, যা ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও অখণ্ডতা বিপন্ন করার কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ঘটনার সূত্রপাত
গত ৭ মে 'অপারেশন সিঁদুর’ স্ট্রাইকে একযোগে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী।এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ভারতের 'অপারেশন সিঁদুরের' সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদ।'অপারেশন সিঁদুর’ স্ট্রাইকের পর দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি। আর তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার এত বড় অভিযান নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন দুই মহিলা আধিকারিক। সংযত অথচ দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অভিযানের বিস্তারিত ব্যাখ্য দেন তাঁরা। অভিযোগ, এরপরেই ফেসবুকে সেনা আধিকারিকদের সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট করেন ওই অধ্যাপক।
এরপর আলি খান মাহমুদাবাদকে ১৮ মে গ্রেফতার করা হয়। তিন দিন পর গত ২১ মে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি এন. কে. সিং-এর বেঞ্চ অধ্যাপক মাহমুদাবাদকে জামিনের স্বস্তি দিলেও, তাঁর মন্তব্যের সময় নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। আদালত মন্তব্য করে, 'এটি ছিল একটি প্রকার ডগ হুইসলিং'-অর্থাৎ গোপন বার্তা দিয়ে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা।আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, বাক-স্বাধীনতার অধিকার থাকলেও তার অপব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়, বিশেষ করে যখন দেশে সংবেদনশীল পরিস্থিতি চলছে।