ভয়াবহ সেই রাতের একবছর পার হতে চলল। কিন্তু এখনও তাঁরা বিচার পাননি বলে দাবি আরজি কর নির্যাতিতার পরিবারের। এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি উড়ে গেলেন খুন হওয়া চিকিৎসকের মা-বাবা। বুধবার সকালে দিল্লি গিয়েছেন তাঁরা। যাওয়ার সময় তাঁরা বলে যান, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হবে বলে আশা করছেন। এছাড়া আজই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী করুণা নন্দীর সঙ্গে আজ দেখা করবেন তাঁরা। এছাড়া সিবিআই ডিরেক্টরের সঙ্গেও দেখা করতে চান নির্যাতিতার মা-বাবা। (আরও পড়ুন: পূর্ব ভারতে হামলার হুমকি পাক সেনার, এরই মাঝে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রী)
আরও পড়ুন: ডিএ মামলায় SC-র তীব্র ভর্ৎসনা, রাজ্যকে 'মহাজন' আখ্যা, 'নৈতিক জয়' সরকারি কর্মীদের
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে বারংবার প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতার মা-বাবা। আর এবার সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা অভিযোগ করলেন, ৭ মাস ধরে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কিত রিপোর্ট সিবিআই জমা দেয়নি। উল্লেখ্য, গতবছর ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হলে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল ট্রেনি জুনিয়র ডাক্তারকে। পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে খুনে একজন জড়িত নয়। আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ অক্টোবর।
এদিকে আরজি কর কাণ্ডে ন্যায় বিচার চেয়ে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন খুন হওয়া চিকিৎসকের মা-বাবা। সেই অভিযানের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাওড়ার এক বাসিন্দা। অভিযোগ, আসন্ন নবান্ন অভিযান ঘিরে শহরের জনজীবন বিপর্যস্ত হতে পারে। আর এবার এই কর্মসূচি রুখতে এবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করেছে। শুনানি নির্ধারিত হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার।
উল্লেখ্য, এর আগে আরজি কর কাণ্ডে শুধুমাত্র সঞ্জয় রায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে আদালতে। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শুধুমাত্র সঞ্জয়কে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করেই চার্জশিট পেশ করেছিল সিবিআই। এই আবহে সিবিআই তদন্তে 'অসন্তোষ' প্রকাশ করেছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা। তাদের বরাবর দাবি, নির্যাতিতার খুনি এখনও আরজি করের চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টেই আছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জানুয়ারি শিয়ালদা আদালতে আরজি কর মামলায় চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনান বিচারক অনির্বাণ দাস। এদিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমনা দিতে হবে সঞ্জয় রায়কে। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি আদালতের তরফ থেকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ (ধর্ষণ), ৬৪ (ধর্ষণের সময় এমন ভাবে আঘাত করা, যাতে মৃত্যু হয়), ১০৩ (১) নং (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এই আবহে সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬৬ ধারায় আওতায় আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ১০৩ (১) ধারার আওতায় সশ্রম যাবজ্জীবনের সাজা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিকে বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাষ্ট্রকে। বিচারক বলেছিলেন, এই মামলা বিরলের থেকে বিরলতম নয়। যদিও সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে আদালতে জোর সওয়াল করেছিল সিবিআই।