সারা বিশ্বের নজর ছিল আলাস্কার প্রতীক্ষিত বৈঠকের দিকে। তার ফলাফল এখন সকলের সামনে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ইউক্রেনের উপরে হামলা চলবে এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনও স্থায়ী মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৈঠকের শুরুটা উষ্ণ অভ্যর্থনার মধ্যে দিয়ে হয়েছিল। পুতিন এবং ট্রাম্পকে একই বুলেটপ্রুফ লিমুজিনে বসতে দেখা যায়, তাঁরা হাসছিলেন এবং হাত মেলাচ্ছিলেন। কিন্তু এই সৌহার্দ্য বৈঠকের ফলাফলের উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি।
পুতিনের বাজিমাত, কী কী বললেন?
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে পুতিন বলেন যে রাশিয়াকে যুদ্ধের মূল কারণগুলো শেষ করতে হবে। অর্থাৎ ন্যাটোর সীমানায় উপস্থিতি। এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় যে যুদ্ধের শেষ হওয়া আপাতত সম্ভব নয়। পুতিন আরও বলেন যে পরবর্তী বৈঠক মস্কোতে হওয়া উচিত, যেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভূমিকা সন্দেহজনক হয়ে যাবে।
কাকে ফোন করা হবে?
ট্রাম্প ক্রমাগত কথাবার্তা এবং মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী ছিলেন। তিনি মাত্র সাড়ে তিন মিনিট কথা বলেন এবং একটিও প্রশ্ন নেননি। তিনি শুধু বলেন যে তিনি ন্যাটো এবং জেলেনস্কিকে বৈঠকের বিষয়ে জানানোর জন্য কিছু ফোন করবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটিকে খুবই দুর্বল ফলাফল হিসেবে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে রাশিয়ার তরফে শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টারাও উপস্থিত ছিলেন। হার্ভার্ডের কিরিল দিমিত্রিভ-সহ অনেক প্রতিনিধির উপস্থিতি এটাই দেখায় যে রাশিয়া এই শীর্ষ সম্মেলনকে বাণিজ্যিক সুযোগ হিসেবেও দেখেছিল। ইউরোপীয় নেতারা এবং ইউক্রেনের নেতারা এইটুকু স্বস্তি পেয়েছেন যে বৈঠকে ইউক্রেনের সীমানা নতুন করে নির্ধারণ করার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। যদিও পুতিনের মূল কারণগুলো নির্মূল করার বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে যুদ্ধ আরও দীর্ঘ হতে পারে।
কার ঝুলিতে জয়?
ট্রাম্পের জন্য জয় তখনই হত, যদি তিনি অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতেন। পুতিনের জন্য জয় এটাই ছিল যে তিনি অস্পষ্ট ভাষায় পরবর্তী আলোচনার জন্য সম্মতি জানাবেন এবং যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবেন। ফলাফল স্পষ্ট। আলাস্কায় এই ঐতিহাসিক সাক্ষাতে পুতিন সম্পূর্ণ জয়লাভ করেছেন। ১৮৬৭ সালে রাশিয়া আর্থিক সংকটে পড়ে আলাস্কা আমেরিকাকে বিক্রি করে দিয়েছিল। কিন্তু ২০২৫ সালে ভূ-রাজনৈতিক লড়াইয়ে পুতিন আলাস্কা থেকে বিজয়ী হয়ে ফিরলেন।