ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তিকেও ছাপিয়ে গেলেন লার্সেন অ্য়ান্ড টুব্রো সংস্থার চেয়ারম্যান! তাঁর বক্তব্য, প্রত্যেক কর্মচারীর সপ্তাহে অন্তত ৯০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত। শুধু তাই নয়, নিজের এই মতামত পেশ করতে গিয়ে মহিলাদের নিয়ে এমন নিম্ন রুচির মন্তব্য করে বসলেন এস এন সুব্রহ্মণ্যন, যে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হল তাঁকে।
সূত্রের দাবি, কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ চলাকালীন সুব্রহ্মণ্যনকে প্রশ্ন করা হয়, কেন লার্সেন অ্য়ান্ড টুব্রোর মতো মাল্টি-বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সংস্থা এখনও কর্মীদের শনিবার কাজ করাচ্ছে?
তার জবাবে সুব্রহ্মণ্যন বলেন, তিনি তো উলটে হতাশ এটা ভেবে যে তিনি তাঁর কর্মীদের রবিবারও কাজ করাতে পারছেন না! কারণ, তিনি মনে করেন, প্রত্যেক কর্মীরই সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করা উচিত।
তাঁর এই মন্তব্যের ভিডিয়ো ইতিমধ্য়েই সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আমার এটা ভেবে অনুশোচনা হচ্ছে যে আমি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারছি না। আমি যদি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারতাম, তাহলে আমি খুশি হতাম। কারণ, আমি রবিবার কাজ করি।'
এরপরই সুব্রহ্মণ্যন তাঁর কর্মীদের উদ্দেশে এমন একটি মন্তব্য করেন, যা শোনার পর তাঁর রুচিবোধ, কট্টর পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, 'বাড়িতে বসে আপনারা কী করবেন? কতক্ষণ নিজের বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবেন? ধুর, অফিসে চলে যান। কাজ করুন।'
এরপরই সুব্রহ্মণ্যন তাঁর এক অভিজ্ঞতা কর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করেন। সেটি ছিল এক চিনা ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ঘটনা। যে চিনা ব্যক্তি নাকি তাঁর কাছে দাবি করেছিলেন, চিন অনায়াসেই আমেরিকাকে হারিয়ে দিতে পারে। কারণ, চিনারা সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করেন। সেখানে মার্কিনিরা সপ্তাহে মাত্র ৫০ ঘণ্টা কাজ করেন।
সেই প্রসঙ্গ টেনে সুব্রহ্মণ্যন বলেন, 'তাহলে, এটাই হল আপনার প্রশ্নের উত্তর। আপনাকে যদি বিশ্বের সেরা হতে হয়, তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করতেই হবে। আপনারা সেটা শুরু করে দিন।'
সুব্রহ্মণ্যনের এই 'বাণী' সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, নারায়ণ মূর্তিকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, এর আগে ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তি দেশের স্বার্থে তরুণদের সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার নিদান দিয়েছিলেন।
নেট ইউজারদের প্রশ্ন, যে কর্মীরা নামমাত্র বেতনে চাকরি করেন, তাঁরা একজন মোটা মাইনে পাওয়া সিইও-র সমতুল্য কাজ করবেন, এমন উদ্ভট আশা কেন করা হচ্ছে?
একজন রে়ডিট ইউজার এই প্রেক্ষিতে লিখেছেন, 'চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার কোনও ইচ্ছা নেই আমার। চিন পৌঁছে যাক এক নম্বরে। তাতে আমার কিস্যু যায় আসে না। আমি শুধু আমার পরিবারের সঙ্গে বসতে চাই। যাতে এই পৃথিবীতে থাকার জন্য আমি যে পরিমিত সময়টুকু পেয়েছি, সেটুকু আমার প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারি।'