২২ এপ্রিল থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোনও ফোনালাপ হয়নি। ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে মার্কিন হাতযশের কথা খারিজ করে দিয়ে স্পষ্ট জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।বুধবার অপারেশন সিঁদুর নিয়ে রাজ্যসভার বিতর্কে বিদেশমন্ত্রী সরাসরি আক্রমণ করলেন কংগ্রেসকে। তাঁর কথায়, ইউপিএ সরকার কোনও পদক্ষেপ না করার প্রত্যক্ষ ফল হল আজকের ভারত বিরোধী চিন-পাকিস্তানের দ্বৈত নাচ।
বুধবার রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে হিন্দিতে বিদেশমন্ত্রী জানান, ‘ম্যায় উনকো কহেনা চাহতা হুঁ, উও কান খুলকে শুন লে। ২২ এপ্রিল সে ১৬ জুন তক, এক ভি ফোন কল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অউর প্রধানমন্ত্রী মোদী কে বিচ নহি হুয়া।‘ একই সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান বিষয়ে মধ্যস্থতার বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থানের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'অপারেশন সিঁদুর শুরু পর থেকেই অনেক দেশ যোগাযোগ করেছে। তারা জানতে চেয়েছে, পরিস্থিতি কী, কোনদিকে গড়াচ্ছে। আর কতদিন ধরে এই পরিস্থিতি চলতে পারে। আমরা সকলকে একই কথা বলেছি...আমরা কোনও মধ্যস্থতায় রাজি নই। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যা হবে, তা দ্বিপাক্ষিক ভিত্তিতেই হবে...আমরা পাকিস্তানের আক্রমণের জবাব দিচ্ছি, এবং আমরা জবাব দিতে থাকব। যদি লড়াই বন্ধ করতে হয়, তাহলে পাকিস্তানকে অনুরোধ করতে হবে। এবং সেই অনুরোধ কেবল ডিজিএমও-এর মাধ্যমেই আসতে পারে...।'
তবে বিদেশমন্ত্রী রাজ্যসভায় একথা মেনে নেন যে, গত ৯ মে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ফোন করে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সম্ভাব্য পাকিস্তানি হামলার কথা জানিয়েছিলেন। মোদী তাঁকে তৎক্ষণাৎ জানিয়ে দেন, যদি এমনটা হয়, তাহলে ভারতও জোরাল এবং চূড়ান্ত জবাব দেবে।পাশাপাশি অমিত শাহের মতো তিনিও সংসদে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কথা টেনে আনেন। বিদেশমন্ত্রী বলেন, '৬০ বছর ধরে আমরা একই কথা বলে আসছি যে, নেহরুর ভুল শোধরানোর নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকার দেখিয়ে দিয়েছে এটা করে দেখানো সম্ভব। যেমন আমরা ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি ঘটিয়ে দিয়েছি। তেমনই সিন্ধু জলচুক্তিকেও শুধরে দিয়েছি।'
বিদেশ মন্ত্রী আরও বলেন, 'সিন্ধু জল চুক্তি বহু দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বের এমন কোনও চুক্তির কথা ভাবতে পারি না, যেখানে কোনও দেশ তার প্রধান নদীগুলিকে অন্য দেশে প্রবাহিত হতে দিয়েছে, সেই নদীর উপর তার অধিকার না থাকলেও। এই ক্ষেত্রে ইতিহাসকে স্মরণ করতে হবে। কিছু মানুষ ঐতিহাসিক বিষয়গুলি ভুলে যেতে পছন্দ করে। তারা কেবল কিছু বিষয়ই মনে রাখতে পছন্দ করে।' তিনি বলেন, '১৯৬০ সালের ৩০ নভেম্বর। জওহরলাল নেহেরু বলেন, পাকিস্তানের পাঞ্জাবের স্বার্থে আমাকে এই চুক্তি করতে হবে। কিন্তু তিনি তখন কাশ্মীর বা পাঞ্জাবের কৃষকদের সম্পর্কে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।এমনকী রাজস্থান বা গুজরাট সম্পর্কে একটি শব্দও নয়।'