'সিন্ধু জল চুক্তি কখনও পুনর্বহাল হবে না।' সরাসরি পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চলতি মাসেই জানা গিয়েছিল, সিন্ধু জল চুক্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত ভারতকে চারটি চিঠি পাঠিয়েছে। এই চারটি চিঠির মধ্যে একটি অপারেশন সিঁদুরের পরে পাঠানো হয়েছিল। এই আবহে অমিত শাহের চুক্তি নিয়ে হুঁশিয়ারিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে পাকিস্তান।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাক্ষাৎকারে সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে অমিত শাহ বলেন, 'না, এটি কখনই পুনরুদ্ধার করা হবে না। আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলি একতরফাভাবে বাতিল করা যাবে না, তবে আমাদের এটি স্থগিত রাখার অধিকার রয়েছে, যা আমরা করেছি। চুক্তির প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে যে এটি দুই দেশের শান্তি এবং অগ্রগতির জন্য ছিল। কিন্তু একবার তা লঙ্ঘন করা হলে, রক্ষা করার মতো কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।' তিনি আরও বলেন,'আমরা ভারতের ন্যায্য অধিকারের জল ব্যবহার করব। আমরা একটি খাল তৈরি করে পাকিস্তানে প্রবাহিত জল রাজস্থানে নিয়ে যাব।' গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার পর, ভারত ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে।
পহেলগাঁওকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করে মন্ত্রী বলেন, এই হামলা কাশ্মীরের শান্তি নষ্ট, পর্যটন বন্ধ এবং কাশ্মীরি তরুণদের বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা ছিল। তিনি বলেন,'পাকিস্তান যাই করুক না কেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোনও দ্বিধা করব না। পর্যটকরা কাশ্মীরে পুনরায় ভ্রমণ যাচ্ছেন। পাকিস্তান ভারতের ভূখণ্ডে আক্রমণ করেছে, কিন্তু ভারত তাদের বিমান ঘাঁটি ধ্বংস করে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে, যার ফলে তারা যুদ্ধবিরতি আবেদন করেছিল।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান,'পহেলগাঁও হামলার জন্য দায়ী সন্ত্রাসবাদীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, আমরা সন্ত্রাসী লঞ্চপ্যাডগুলিতে আক্রমণ শুরু করেছি। কিন্তু পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের উপর আমাদের আক্রমণকে তাদের ভূখণ্ডে আক্রমণ হিসাবে বিবেচনা করেছে।'
একই সঙ্গে কংগ্রেসের প্রবল সমালোচনা করেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, 'আমি কংগ্রেসকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, তাদের আমলে কী হত? সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে কংগ্রেস কীভাবে আমাদের প্রশ্ন করতে পারে? তারা কেবল একজন মন্ত্রী পরিবর্তন ছাড়া আর কিছুই করত না। আমাদের সমালোচনা করার কোনও অধিকার নেই কংগ্রেসের।'
উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার একদিন পর সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, 'সিসিএস সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদের জল চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত থাকবে, যতক্ষণ না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং অবিচলভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাহার করে।' সূত্রের খবর, এরপরেই পাকিস্তানের জল সম্পদ মন্ত্রকের সচিব সৈয়দ আলি মুর্তজা চারটি চিঠি জলশক্তি মন্ত্রকে পাঠিয়েছিলেন। এরপর মন্ত্রক সেগুলি বিদেশ মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেয়।সিন্ধু জল চুক্তির অধীনে ভারত সিন্ধু জল ব্যবস্থার পূর্বের ৩টি নদীর জল ব্যবহার করতে পারে এবং পশ্চিমের বাকি ৩টি নদীর জলের উপর পাকিস্তানকে অধিকার দেওয়া হয়েছিল। এখন, জল চুক্তি স্থগিত হওয়ার কারণে, পাকিস্তানে জল সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে।