কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ভারতীয় বায়ুসেনার এক কর্পোরালের মৃত্যু হল। বুধবার অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু জানিয়েছেন, স্ত্রী'র সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গিয়েছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার কর্পোরাল তেগ হেলিয়াং। যিনি আদতে অরুণাচলের লোয়ার সুবানসিরির তাজাং গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘অত্যন্ত বীরত্ব এবং সম্মানের সঙ্গে উনি দেশের সেবা করেছিলেন। তাঁর অকাল প্রয়াণে শুধু পরিবারের নয়, দেশের বিরাট ক্ষতি হল। তাঁর প্রিয়জন এবং স্ত্রী’র প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই অকল্পনীয় শোকের মুহূর্তে তাঁরা যেন শক্তি পান।'
শ্রীনগরে পোস্টিং ছিল, ছুটি কাটাতে যান পহেলগাঁওয়ে
সূত্রের খবর, আদতে অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা হলেও বায়ুসেনার কর্পোরাল কর্মসূত্রে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে থাকতেন। তারইমধ্যে ছুটি কাটাতে স্ত্রীয়ের সঙ্গে পহেলগাঁওয়ে গিয়েছিলেন। আর সেইসময় জঙ্গি হামলায় বায়ুসেনা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী।
নাম গোপন রাখার শর্তে অনন্তনাগ পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘যাবতীয় নিয়মকানুন পালনের পরে তাঁর মরদেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাঁর কয়েকজন বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা এখানে উপস্থিত আছেন।’
আরও পড়ুন: জঙ্গি হামলায় উঠে আসছে ‘ফ্যালকন স্কোয়াড’-এর নাম! বিচিত্র ‘নোংরা’ কায়দায় আক্রমণ করে এরা
মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় নৌসেনা অফিসারেরও
সেই জঙ্গি হামলার ঘটনায় ভারতীয় নৌসেনার এক অফিসার এবং ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) এক অফিসারেরও মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা সকলেই পরিবারের সঙ্গে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। গত ১৬ এপ্রিল বিয়ে হয়েছিল নৌসেনার অফিসার লেফটেন্যান্ট বিনয় নরওয়ালের (২৬)। কোচিতে কর্মরত নৌসেনার অফিসার স্ত্রী'র সঙ্গে কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। আর সেই স্বপ্নের সফর মঙ্গলবার পরিণত হয় বিভীষিকায়।
পুরুলিয়ার IB অফিসারের মৃত্যু হয়েছে জঙ্গি হামলায়
একইরকমভাবে কাশ্মীর সফর বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর অফিসার মণীশরঞ্জন মিশ্রের পরিবারের কাছেও। আদতে পুরুলিয়ার ঝালদার পুরনো বাঘমুণ্ডি রোডের বাসিন্দা হলেও হায়দরাবাদের আইবি অফিসে সেকশন অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। গত ১৫ এপ্রিল হায়দরাবাদ থেকেই স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। অযোধ্যা, হরিদ্বার হয়ে কাশ্মীরে পৌঁছেছিলেন। পহেলগাঁও থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরেও যাওয়ার কথা ছিল।
বৈষ্ণোদেবীতে বাবা-মায়ের সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল আইবি অফিসারের। সেজন্য মঙ্গলবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। কথা ছিল যে সবাই মিলে বৈষ্ণোদেবী দর্শনে যাবেন। কিন্তু মঙ্গলবারই সব শেষ হয়ে গিয়েছে। মাঝপথেই ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে পুরুলিয়ায় ফিরে আসেন মণীশের পরিবারের সদস্যরা।