সোনার দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ভারতে এখন ১০ গ্রাম সোনা কিনতে গেলে খরচ করতে হবে লক্ষ টাকা! কোন দেশের সরকারের ভাঁড়ারে কত পরিমাণ সোনা মজুত রয়েছে, গোল্ড বন্ডের হালহকিকত এখন ঠিক কেমন, কোন দেশের গৃহস্থদের অন্দরমহলে কত গয়না রয়েছে, এসব নিয়ে সোশাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমে নানা আলোচনা চলছে। তারই মধ্য়ে সামনে এল এক নয়া প্রযুক্তি। যার নেপথ্যে রয়েছে চিন! শোনা যাচ্ছে, সেদেশের সাংহাইয়ে নাকি একটি 'গোল্ড এটিএম' বসানো হয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই 'গোল্ড এটিএম' নিয়ে সংবাদমাধ্যমেও লেখালিখি শুরু হয়ে গিয়েছে। খবরে প্রকাশ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি এই গোল্ড এটিএম-এ যেকোনও সোনার গয়না রাখলেই সেই সোনার শুদ্ধতা, ওজন প্রভৃতি যাচাই করে নেওয়া হচ্ছে। তারপর জানানো হচ্ছে, সেদিনের বাজারদর অনুসারে - সেই সোনার দাম কত। আর, তারপর মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই সেই টাকা গয়নার মালিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য বিক্রেতাকে কোনও কোনও দোকানে যেতে হচ্ছে না, কোনও নথিপত্রের ঝঞ্ঝাট পোহাতে হচ্ছে না।
'মানি কন্ট্রোল' অনুসারে - এই গোল্ড এটিএম পরিচালনা করছে চিনের 'কিংহুড গ্রুপ'। তারা গ্রাহক বা ক্রেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সোনার দাম পাঠানোর আগেই সেই সোনা যাচাই করে নেওয়ার পাশাপাশি সমস্ত হিসেবনিকেশও সেরে ফেলছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে আরও জানা গিয়েছে, সাংহাইয়ের একটি শপিং মলে এই গোল্ড এটিএম বসানো হয়েছে। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে যে কেউ ৩ গ্রামের বেশি ওজনের এবং ন্যূনতম ৫০ শতাংশ খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরি যেকোনও গয়না এই এটিএম-এর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন।
কিন্তু, ইতিমধ্যেই যেভাবে এই এটিএম জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তাতে চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে এটিএম ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারণ, সর্বক্ষণই এটিএম-এর সামনে বিক্রেতাদের লম্বা লাইন থাকছে। এমনকী, চায়নাটাইমস ডট কম অনুসারে - গোল্ড এটিএম-এর মাধ্যমে সোনা বিক্রি করার জন্য বিক্রেতাদের আগে থেকে 'অ্যাপয়েন্টমেন্ট' করে যেতে হচ্ছে! জানা গিয়েছে, আগামী মে মাস পর্যন্ত এই এটিএম ব্যবহার করার সমস্ত 'বুকিং স্লট' ভর্তি হয়ে গিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট চিনা সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, যখন এই এটিএম সম্পর্কে প্রচার করা হচ্ছিল, তখন ৪০ গ্রাম ওজনের একটি নেকলেস এই মেশিনে রাখা হয়। যার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৩৬ হাজার ইউয়ানের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা) কিছু বেশি টাকা।
সাংহাই গোল্ড অ্য়াসোসিয়েশনের সদস্য শু ওয়েইজিন এই প্রসঙ্গে বলেন, 'স্মার্ট গোল্ড এটিএম চালু করার প্রাথমিক লক্ষ্য হল - বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য়ে সোনা রিসাইকেল করা। যেভাবে সোনার দর বাড়ছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে আমজনতার কাছে গচ্ছিত থাকা সোনার দামও বাড়ছে। ফলে মানুষের সোনা বিক্রি করার প্রবণতাও বাড়ছে। সোনার দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং শিল্পে বিনিয়োগকারীরা সোনা কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে।'