এবার একেবারে সরাসরি পর্যটকদের উপর আঘাত। কাশ্মীরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। আর সেই কাশ্মীরেই প্রাণ গিয়েছে তাঁদের। ধীরে ধীরে কাশ্মীরে পর্যটকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছিল। আর সেই পর্যটকদের উপরই আঘাত হানল জঙ্গিরা।
এসবের মধ্য়েই মুখ খুলেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ। তিনি এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, এই প্রথম আমি দেখছি জঙ্গি হামলার কারণে সমগ্র কাশ্মীরের মানুষ হতবাক। শোকাহত। প্রতিটি জেলা শহরে, গ্রামে বনধের আয়োজন করা হয়েছে। চারদিকে নীরবতা।
তিনি বলেছেন একটা সময় ছিল যখন জম্মু ওকাশ্মীরের কিছু মসজিদ থেকে জঙ্গিদের সমর্থনে বক্তৃতা দেওয়া হত। মাইকে তাদের সহযোগিতা করার জন্য় আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমবারের মতো আমি দেখছি যে মসজিদের ইমামরাও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তারা প্রকাশ্যে জঙ্গিদের নিন্দা করছেন। খবর লাইভ হিন্দুস্তানের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে।
এদিকে নিরীহ পর্যটকদের উপর এই জঙ্গি হানার পরে কাশ্মীরের ভেতর থেকেই এবার প্রতিবাদের আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে। এমনকী ৩৫ বছরে এমন ছবি আগে দেখেনি কাশ্মীর। জঙ্গি হানার বিরুদ্ধে এবার নিন্দার ঝড় কাশ্মীর জুড়ে। দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁও। সেখানেই মঙ্গলবার জঙ্গি হানা। একের পর এক পর্যটককে গুলি করেছে জঙ্গিরা। অনেকেই আহত হয়েছেন।
ইতিমধ্য়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গিয়েছেন কাশ্মীরে। উপত্যকা জুড়ে নিরাপত্তার কড়াকড়ি।
শ্রীনগরে একাধিক পেট্রল পাম্প বন্ধ। পর্যটকরা অধিকাংশই হোটেলের ঘরের ভেতরে রয়েছেন। অত্যাবশ্য়কীয় পণ্যের কিছু দোকান খোলা রয়েছে। কিছু প্রাইভেট গাড়ি চলছে। সরকারি স্কুল চলছে। তবে বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুল বন্ধ। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, একাধিক জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচি হয়েছে। তাদের অনেকেরই দাবি যাতে সাধারণ পর্যটকদের উপর এই হামলা বন্ধ করা হয়। মুতাহিদা মজলিস উলেমা এই ঘটনার নিন্দা জানানোর জন্য় আহ্বান করেছে।
কাশ্মীরের বাণিজ্য বিষয়ক সংগঠন কাশ্মীর চেম্বার অফ কমার্স এই অঘোষিত বনধকে সমর্থন করেছে। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করেছে। প্রাইভেট স্কুল অ্য়াসোসিয়েশন জম্মু ও কাশ্মীরে তাদের স্কুল বন্ধ রেখেছে।
বিভিন্ন চেক পয়েন্টে চলছে সেনার তল্লাশি। বৈসরন, পাহালগাঁও সহ বিভিন্ন এলাকায় চলছে তল্লাশি।
অন্যদিকে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, বুধবার কাশ্মীরের লিডিং নিউজপেপার তাদের প্রথম পাতা কালো করে এই জঙ্গি হানার প্রতিবাদ জানিয়েছে। ইংরেজি ও উর্দু দৈনিক গ্রেটার কাশ্মীর, রাইজিং কাশ্মীর, কাশ্মীর উজমা, আফতাবের মতো কাগজ যাবতীয় বাহুল্যতাকে বর্জন তাদের প্রথম পাতা কালো করে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাল এই জঙ্গি হানার।