ভারত ও চিনের সম্পর্কের 'উন্নতি'তে বড় পদক্ষেপ। ভারত ও চিন সীমান্ত সংঘাত সমাধানে দুই দেশই প্রস্তুত কম বিতর্কিত অংশ থেকে সীমান্ত নির্ধারণ শুরু করে ধাপে-ধাপে স্থায়ী সীমা নির্দিষ্ট করার কাজে নামতে। মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র মধ্যে বিশেষ প্রতিনিধি বৈঠকে এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে উভয় পক্ষ।
আরও পড়ুন-মাস্কের সাধের টেসলা! দাউদাউ করে জ্বলছে অত্যাধুনিক গাড়ি, ঠিক কী ঘটেছে?
যদিও দুই পক্ষই আপাতত এই অগ্রগতির খুঁটিনাটি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে, তবুও ডোভাল এবং ওয়াং ই তিনটি প্রধান সেক্টরকে চিহ্নিত করেছেন, যেখানে তুলনামূলকভাবে কম সংঘাত। সেখান থেকেই শুরু হবে সীমারেখা নির্ধারণ এবং পরবর্তী ধাপে সীমা চিহ্নিতকরণ। প্রথম ধাপে গঠন করা হবে একটি টেকনিক্যাল এক্সপার্ট গ্রুপ, যা কাজ করবে ডাব্লুএমসিসি-র অধীনে এবং নেতৃত্ব দেবেন বিদেশ মন্ত্রকের একজন যুগ্ম সচিব।এরপর দ্বিতীয় ধাপে চিহ্নিত করা হবে সেই সব জমি যেখানে দু’পক্ষের মধ্যে সর্বনিম্ন মতপার্থক্য রয়েছে। তৃতীয় ধাপে হবে সেই জমির সীমারেখা নির্ধারণ এবং চূড়ান্ত ধাপে আন্তর্জাতিক সীমান্তে স্তম্ভ বসিয়ে নির্দিষ্ট করা হবে চূড়ান্ত সীমা।সহজভাবে বলতে গেলে, ভারত ও চিন এবার একসঙ্গে ধাপে-ধাপে সমাধানের পথে হাঁটছে।২০২০ সালের মে মাসে পূর্ব লাদাখে সংঘর্ষের পর যে সব ইস্যু আটকে রয়েছে, সেগুলিও সমাধানের পথে এগোচ্ছে দুই দেশ। বিতর্কিত এলাকায় তৈরি হওয়া বাফার জোনের বিষয় এখনও অমীমাংসিত থাকলেও, ভারত ও চিন উভয়ই একমত হয়েছে যে সীমান্তে সেনা মোতায়েন থাকবে অ-আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে।এটি উত্তেজনা হ্রাসের প্রথম পদক্ষেপ এবং সীমান্তের উভয় পক্ষের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা মাথায় রেখে লাদাখ এলএসি থেকে ট্যাঙ্ক, রকেট এবং কামানগুলিকে অ-আক্রমণাত্মক অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হবে। যদিও ভারতীয় লাদাখ সেক্টরে ভয়ঙ্কর পাহাড় এবং গিরিপথ রয়েছে, অন্যদিকে চিনা পক্ষের কাছে সমতল তিব্বত পর্বত, মালভূমি রয়েছে। যার ফলে পিএলএ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চেয়ে অনেক দ্রুত অগ্রসর হতে পারে।
আরও পড়ুন-মাস্কের সাধের টেসলা! দাউদাউ করে জ্বলছে অত্যাধুনিক গাড়ি, ঠিক কী ঘটেছে?
এই আবহে আগামী ৩১ অগাস্ট তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হচ্ছে এক নতুন প্রত্যাশা। দুই এশীয় সুপারপাওয়ার এবার পারস্পরিক স্বার্থকে সামনে রেখে আরও বাস্তবসম্মত ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকে এগোচ্ছে।এদিকে, তিন বছর পর ভারত সফরে এসেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গালওয়ান সংঘর্ষ-পরবর্তী বরফ গলতে শুরু করেছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গালওয়ান সংঘর্ষ-পরবর্তী দীর্ঘ উত্তেজনার পর ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ গলছে। সীমান্ত বিরোধ, তীর্থযাত্রা, বিমান যোগাযোগ, বাণিজ্য থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ-সব ক্ষেত্রেই নতুন দিগন্ত খুলছে দুই দেশের সম্পর্কে।