প্রাকৃতিক রোষের বলি উত্তরাখণ্ড।মেঘভাঙা বৃষ্টির পরেই হড়পা বানে মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে ধারালি গ্রামের বেশ খানিকটা অংশ। মঙ্গলবার আচমকা হড়পা বান আসে ক্ষীরগঙ্গা নদীতে। বানের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ঘরবাড়ি, যানবাহন, হোটেল, রাস্তাঘাট। এরমধ্যেই সামনে এসেছে নেপালের পরিযায়ী শ্রমিক কালী দেবী এবং তাঁর স্বামী বিজয় সিংয়ের এক করুন কাহিনী। (আরও পড়ুন: 'অনেক মূল্য দিতে হবে জানি, তবে ভারত প্রস্তুত আছে', শুল্ক যুদ্ধের আবহে বললেন মোদী)
আরও পড়ুন: ২ মাসে দ্বিতীয়বার আমেরিকায় যাচ্ছেন মুনির, ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে মার্কিন-পাক সেনার?
আরও পড়ুন: ট্রাম্প মুখে ৫০% বললেও ভারতের ওষুধ ও ফোনের ওপর শুল্ক শূন্য, পেট্রোপণ্য ৬.৯ শতাংশ
হড়পা বান আসার আগেই ওই নেপালি দম্পতি উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর হরশিল উপত্যকা ছেড়ে চলে এসেছিলেন। কিন্তু নিজেরা বাঁচলেও, তার সন্তানরা আদৌ বেঁচে রয়েছেন কিনা তা জানেন না দম্পতি। উপত্যকায় মেঘ ভাঙনের ফলে ব্যাপক বন্যা এবং ভূমিধসের পরে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে তারা। তবে ছেলেদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলেছে, 'বাবা, আমরা বাঁচবো না, প্রচুর জল।' কালী দেবী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ভাটওয়ারির উদ্দেশ্যে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে রওনা হয়েছিলেন। তারাই একমাত্র ব্যক্তি যারা দুর্যোগ আসার আগেই গ্রাম ছাড়েন। পরের দিন বাকি ২৪ সদস্যের কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করা যায়নি। বুধবার, দম্পতি গঙ্গাওয়াড়ি পর্যন্ত হেঁটে যান। এই রাস্তা হরশিল উপত্যকার দিকে যায়। কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেসে যাওয়ার পর তাঁরা আর এগোতে পারেননি। (আরও পড়ুন: জিনজিয়াং সফরে গিয়ে উইঘুরদের ওপর চিনা অত্যাচার নিয়ে নীরব পাকিস্তানি দল)
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে ২৫টি বই নিষিদ্ধ হল, তালিকায় সুগত বসু, অরুন্ধতী রায়ের লেখা
আরও পড়ুন-ইমপিচমেন্টের ভ্রূকুটি! সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা, বিচারপতি যশবন্ত ভর্মার আবেদন খারিজ
কিন্তু বেঁচে ফিরেও নিশ্চিত হতে পারছেন না কালী দেবী ও বিজয় সিং। সন্তানরা কেমন আছেন, আদৌ আছেন কিনা তা জানতে পারেননি কেউ। কালী দেবী কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, 'আমরা যখন উপত্যকা ছেড়ে চলে আসি, তখন আমরা কখনও ভাবিনি যে এই অঞ্চলে এমন দুর্যোগ আসবে। যদি আমি আসন্ন বন্যার কথা জানতাম, তাহলে আমার সন্তানদের পিছনে ফেলে চলে আসতাম না। আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি আমাদের হরশিল উপত্যকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা নিজেরাই আমাদের সন্তানদের খুঁজে বের করব।' শ্রমিকদের পাশাপাশি, দুর্যোগের সময় উপত্যকায় সেনাবাহিনীর একটি দলও উপস্থিত ছিল। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১ জন জওয়ান নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: মার্কিন শুল্ক হুমকিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে মউ স্বাক্ষর ভারতের)
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ওপর দোষও চাপাতে পারবেন না, ট্রাম্পের ৫০% শুল্ক নিয়ে মোদীকে তোপ খাড়গের
উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে প্রবল বৃষ্টির ফলে ব্যাপক সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে। মঙ্গলবার উত্তরকাশীর হারশিলের কাছে ধারালি গ্রামে ভয়াবহ মেঘভাঙা ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এই বন্যায় ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং যানবাহন ভেঙে অসংখ্য মানুষ আটকা পড়েছেন। কমপক্ষে পাঁচজন মারা গিয়েছেন। গঙ্গার উৎপত্তিস্থল গঙ্গোত্রীতে যাওয়ার পথে ধারালি হল প্রধান স্টপ। এখানে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং হোম স্টে রয়েছে।বৃহস্পতিবার বন্যা কবলিত গ্রামে উন্নত সরঞ্জাম বিমানে করে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে যাতে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের অনুসন্ধান দ্রুত করা যায় সেই জন্য। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি উদ্ধার অভিযান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সেখানে ক্যাম্প করছেন। আবহাওয়ার উন্নতি হলে এবং অবরুদ্ধ রাস্তাগুলি খুলে দেওয়া হলে তা গতি পাবে।জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন নিখোঁজদের সন্ধান শুরু করেছে।