ইরানে হামলার কারণ বোঝাতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের ভুল মানচিত্র পোস্ট করেছিল ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। আর সেটাকে ঘিরে তুঙ্গে ওঠে বিতর্ক। চাপে পড়ে শেষপর্যন্ত মানচিত্রে ত্রুটি আছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে আইডিএফ। ক্ষমাও চেয়েছে তারা।
শুক্রবার ইজরায়েল হামলা চালিয়েছিল ইরানে। আর তাতে মৃত্যু হয় ইরানের চার শীর্ষ সেনাকর্তা এবং ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীর। এই হামলার পরেই একটি মানচিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আইডিএফ। যেখানে মূলত পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিকে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও পূর্বে ভারত, পাকিস্তান এবং পশ্চিমে আফ্রিকার কিছু অংশও ওই মানচিত্রে রয়েছে। মানচিত্রের একেবারে মাঝে ইরানকে দেখানো হয়েছে। তার চারপাশে বেশ কয়েকটি স্তর ভাগ করে বোঝানো হয়েছে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সেখানে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সুদান, তুরস্ক, চিন, কাজাখস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেন, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, মিশর, লিবিয়া, ইথিওপিয়া, ওমান, জর্ডন এবং সৌদি আরবের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে এই দেশগুলিতে তার প্রভাব পড়তে পারে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা এই দেশগুলি পর্যন্ত বিস্তৃত। মানচিত্র দেখিয়ে আইডিএফ লিখেছিল, ‘ইরান বিশ্বের কাছেই একটা হুমকি। ইজরায়েলই তাদের শেষ লক্ষ্য নয়। এটা সবে শুরু। আমাদের তাই কোনও উপায়ই ছিল না আঘাত করা ছাড়া।’
আরও পড়ুন-ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ, দাবি নজরদারি সংস্থা, মানুষের বিপদ?
কিন্তু ইজরায়েল বাহিনীর এই মানচিত্রে ভারতের উত্তরে জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ নেই। নেপাল ও ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতকে একটিই দেশ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ম্যাপে সীমান্ত নির্ধারণ নিয়ে ভারতীয় নেটিজেনদের ক্ষোভ চরমে ওঠে। অনেকে এই পোস্টটি মেনশন করেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকেও।
একজন লেখেন, ‘দয়া করে এটা সরান। ভারত আপনাদের পাশে সব সময়ই রয়েছে।’ অপর একজনকে লিখতে দেখা যায়, ‘আমাদের শত্রুও একই। দুই দেশ খুব ভালো বন্ধু। কাজেই ভারতের সঠিক মানচিত্র প্রকাশ করাই আপনাদের পক্ষে ঠিক কাজ হবে।’ ঘণ্টাদুয়েকের মধ্যে বিতর্ক বুঝে আইডিএফ পাল্টা একটি পোস্ট করে। তাতে লেখা হয়, ‘এটি গোটা অঞ্চলের একটি ছবি। এই মানচিত্রে সঠিকভাবে সীমানা চিহ্নিত করা যায়নি। এর জন্য কারও খারাপ লেগে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।’ তবে এখনও পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদী সরকার এই ভুল মানচিত্র নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আরও পড়ুন-ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ, দাবি নজরদারি সংস্থা, মানুষের বিপদ?
ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের যে অংশ পাকিস্তান এবং চিন দীর্ঘ সময় ধরে দখল করে রেখেছে, তা সবসময়ই ভারতের অংশ। পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফের এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে ভারত এবং ইজরায়েল বন্ধু রাষ্ট্র। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই দেশে গিয়েছিলেন।