বৃহস্পতিবারই মালয়ালম অভিনেত্রীকে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক বাড়তেই দলের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন কেরলের বিধায়ক তথা কংগ্রেস যুব সভাপতি রাহুল মামকুতাথিল। এই আবহে এক রূপান্তরিত মহিলা সমাজকর্মীর অভিযোগ তুলেছেন যে তাঁকে আপত্তিকর যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ মেসেজ পাঠিয়েছেন রাহুল। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে কেরল জুড়ে।
অবন্তিকা নামে ওই সমাজকর্মী জানান, একটি নির্বাচনী আলোচনায় রাহুলের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়। তারপর থেকেই গভীর রাতে অবন্তিকাকে ফোন করতে শুরু করেন রাহুল। লাগাতার ফোন করে বিরক্ত করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, যৌন ইচ্ছার কথা জানিয়ে মেসেজও করতেন রাহুল। অবন্তিকার কথায়, রাহুলের যৌন ইচ্ছাগুলো অনেকটাই ধর্ষণের সমতুল্য। সেই ইচ্ছার কথা বারবার মেসেজ করে জানিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক।কিন্তু কংগ্রেসের দলীয় নেতৃত্বের কাছে রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অবন্তিকার দাবি। অবন্তিকাকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'আমার মনে হয় তিনি যৌন ইচ্ছা নিয়ে হতাশ ছিলেন কারণ রাহুল বলেছিল যে সে আমাকে ধর্ষণ করতে চায়। তিনি বলেছিলেন যে আমরা বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদে গিয়ে এটা করতে পারি।'
আরও পড়ুন-পশুপ্রেমীদের জয়! বন্ধ্যাত্বকরণের পর মুক্ত পথ কুকুররা, SC-র বিশেষ নির্দেশ
বুধবার এক সাক্ষাৎকারে মালয়ালম অভিনেত্রী ও প্রাক্তন সাংবাদিক রিনি জর্জ বলেন, তরুণ এক রাজনীতিকের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব হয় তাঁর। প্রায়শই টেলিভিশন চ্যানেলে, আন্দোলনের অগ্রভাগে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু সেই থেকে লাগাতার তাঁকে হেনস্থা করে চলেছেন ওই রাজনীতিক। অশ্লীল মেসেজ পাঠানোর পাশাপাশি, হোটেলের ঘরেও ডাকছেন। অন্য মহিলাদেরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে, এমনকি দলের মহিলা কর্মীদেরও হেনস্থা হতে হয়েছে বলে দাবি করেন রিনি।তাঁর অভিযোগ, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বারবার জানানো সত্ত্বেও ওই যুবনেতাকে নানা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যদিও রিনি সরাসরি ওই নেতার নাম বলেননি, তবে বিজেপি কর্মীরা পালাক্কাড়ের বিধায়ক রাহুল মামকুতাথিল-র কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের অভিযোগ, ওই যুবনেতা আসলে রাহুল মামকুতাথিল। রাহুল কেরলের যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতিও।বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগের দাবি জানান।
আরও পড়ুন-পশুপ্রেমীদের জয়! বন্ধ্যাত্বকরণের পর মুক্ত পথ কুকুররা, SC-র বিশেষ নির্দেশ
অন্যদিকে, রিনি জর্জের অভিযোগের পর লেখিকা হানি ভাস্করানও রাহুলের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। হানি তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, রাহুল তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার বার্তা পাঠাতেন। প্রথমে তাদের কথোপকথন ভ্রমণের বিষয় নিয়ে শুরু হলেও, পরে তিনি বুঝতে পারেন যে রাহুল তার সঙ্গে বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলছেন। এরপর তিনি উত্তর দেওয়া বন্ধ করে দেন। হানিও দাবি করেন যে যুব কংগ্রেসের অনেক কর্মী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।এরপরেই চাপের মুখে বৃহস্পতিবার কেরল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল মামকুতাথিল। তবে অভিনেত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি। রাহুলের বক্তব্য, 'আমার বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছি, আদালতে অভিযোগ প্রমাণ করে দেখান। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ কিন্তু জমা পড়েনি। দেশের আইন ব্যবস্থার উপর ভরসা আছে আমার। ও আমার কাছের বন্ধু। আমার নামে কিন্তু অভিযোগ করেনি ও। এখনও ওকে কাছের বন্ধু বলেই মনে করি।'