এর আগে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমান গত ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ভয়াবহ দু'টি দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল। এর জেরে মোট ৩৪৬ জন যাত্রীর মৃত্যু ঘটেছিল। এরপর বহু দেশে এই বিমানটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
আলাস্কা এয়ারের দুর্ঘটনার জেরে আমেরিায় ‘গ্রাউন্ড’ করাল হল বোয়িং ম্যাক্স বিমান
মার্কিন অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষ বা এফএএ সাময়িক ভাবে সব বোয়িং ম্যাক্স বিমানকে 'গ্রাউন্ড' করল আমেরিকায়। সম্প্রতি আলাস্কা এয়ারলাইন্সের একটি উড়ানের সময় বোয়িং ৭৩৭-৯ ম্যাক্স বিমানের একটি অংশ আকাশেই উড়ে গিয়েছিল। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায়। এই আবহে আপাতত সব মার্কিন উড়ান সংস্থাকে বোয়িংয়ের ম্যাক্স বিমানকে গ্রাউন্ড করা নির্দেশ দিয়েছে এফএএ। পাশাপাশি আমেরিকায় অন্য দেশের উড়ান সংস্থাও এখন বোয়িং ম্যাক্স ওড়াতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। আগামী নির্দেশিকা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে। (দেখুন ভিডিয়ো: মাঝ আকাশে উড়ে গেল বিমানের অংশ! বাতাসের টানে ছিঁড়ল যাত্রীর জামা, উড়ল ফোন)
এর আগে মঙ্গলবার আলাস্কা এয়ারের দুর্ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার করেন বোয়িংয়ের সিইও ডেভ ক্যালহুন। এদিকে ম্যাক্স বিমান পরীক্ষা করা নিয়ে নিজেদের গাইডলাইন খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বোয়িংকে। এই আবহে বোয়িংয়ের থেকে সংশোধিত গাইডলাইন হাতে পেলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এফএএ। এরপরই ম্যাক্স ৭৩৭-৯ বিমানকে ফের আকাশে ওড়ার অনুমতি দেওয়া নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করা হবে। এদিকে আলাস্কা এয়ারের ঘটনার পর সব বোয়িং ম্যাক্স ৭৩৭-৯ বিমানকে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই পরীক্ষা চলাকালীন একটি বিমানের যন্ত্রাংশের নাট-বল্টু মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর জেরে বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে আরও প্রশ্ন ওঠে। এরপরই এফএএ এই বিমানটিকে সাময়িক ভাবে গ্রাউন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকায়।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি মাঝ আকাশেই বোয়িং ৭৩৭-৯ বিমানের জানলা সব একটা বড় অংশ ভেঙে গিয়ে 'উড়ে যায়'। রিপোর্ট অনুযায়ী, অরেগনের পোর্টল্যান্ড থেকে বিমানটি টেকঅফ করার কিছু পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি ক্যালিফোর্নিয়ার ওন্টারিওতে যাচ্ছিল। তবে দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে বিমানচালক ফেরার পথ ধরেন। জরুরি অবস্থায় বিমানটিকে অবতরণ করানো হয় পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমানে ১৭৪ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু ছিলেন। বিমানে থাকা ১৮০ জনের মধ্যে কেউই আহত হননি বলে জানা যায়। জানা গিয়েছে, বিমানটি যখন ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল, তখন আচমকাই একটি জানলা ভেঙে যায়। এরপর বিমানের ভিতরে বাতাসের চাপ বা কেবিন প্রেসার কমে যায়। এরপরই বিমানের একটা বড় অংশ আকাশে উড়ে যায়। বিমানযাত্রীরা এক বিকট আওয়াজ শুনতে পান সেই সময়। যে জানলাটি ভেঙে উড়ে যায়, তার পাশেই বসে ছিল এক শিশু। হাওয়ার টানে তার জামা ছিঁড়ে যায়। এদিকে ঘটনার সময় অনেক যাত্রীর হাতেই ফোন ছিল। সেই ফোনও উড়ে চলে যায় বিনানের সেই অংশ দিয়ে। হাওয়ার টান এমনই ছিল যে বিমানের ভাঙা অংশের পাশের একটি আস্ত আসন উড়ে চলে যায়। এই ঘটনায় স্বভাবতই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা।