বাংলায় ৫৬ তরুণীকে পাচারের ছক বানচাল করল জলপাইগুড়ির জিআরপি ও আরপিএফ। পাটনাগামী ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস থেকে তাঁদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ১ মহিলা-সহ ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।ধৃতদের কথায় বিস্তর অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। তরুণীদের উদ্ধারের পরই খবর দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদের। পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় তরুণীদের।
সূত্রে খবর, কাজের টোপ দিয়ে উত্তরবঙ্গের চা বাগান এলাকার তরুণীদের নিশানা করেছিল পাচারচক্রটি। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের তরুণীদের নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আটকের পর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁদের কথায় অসঙ্গতি ধরা পরে। তারপরেই জানা যায়, বেঙ্গালুরুতে একটি কোম্পানিতে নাম করে আদতে বিহারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই তরুণীদের। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নিয়ে এসে তাদের সবাইকে তোলা হয় এনজেপি পাটনা ক্যাপিটাল এক্সপ্রেসে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ওই তরুণীদের কারোও কাছেই কোনও টিকিট ছিল না। তাদের প্রত্যেকের হাতেই একটি করে সিল ও সিট নম্বর লেখা ছিল। তা দেখে টিকিট চেকারের সন্দেহ হয়। সবাই বলছে, তারা বেঙ্গালুরু যাবে, কিন্তু উঠেছে পাটনার ট্রেনে। সবমিলিয়ে সন্দেহ আরও গাঢ় হয়।
আরও পড়ুন-'পাকিস্তান ধারাবাহিক ঋণগ্রহীতা...,' বিশ্বমঞ্চে ফের শাহবাজকদের তুলোধোনা ভারতের
অন্যদিকে, সোমবার সূত্র মারফত ভিন রাজ্যে মাহিলাদের পাচারের খবর আসে রেল পুলিশের কাছে। এরপরেই যৌথভাবে অভিযান চালায় জিআইপি ও আরপিএফ। আর সেই অভিযানে উদ্ধার করা হয় ওই তরুণীদের। প্রায় ৫৬ জন তরুণীকে ট্রেন থেকে নামানো হয় এনজেপি স্টেশনে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তাদের বেঙ্গালুরুতে আইফোন কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার করে ট্রেনে বসানো হয়। কিন্তু তারা যে বিহারের পাটনার ট্রেনে বসে রয়েছে, সেই বিষয়ে তাদের কোনও ধারণাই নেই। এটা নারী পাচারের অন্যতম ছক বলে মনে করছে রেল পুলিশ।পাশাপাশি ২১ জুলাই দিনটিকেই বেছে নিয়েছিল পাচারকারীরা। কারণ ওই দিন ট্রেনে ভিড় থাকে। কোনও সন্দেহ হবে না কারও। নিরাপত্তাও তেমন থাকবে না বলেই মনে করেছিল তারা। ওই ভিড়ের মাঝে মিশেই তরুণীদের পাচার করার ছক কষেছিল তারা।
আরও পড়ুন-'পাকিস্তান ধারাবাহিক ঋণগ্রহীতা...,' বিশ্বমঞ্চে ফের শাহবাজকদের তুলোধোনা ভারতের
আপাতত ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এর নেপথ্যে কোনও চক্র সক্রিয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।রেল পুলিশ এবং আরপিএফ যৌথভাবে মামলাটি তদন্ত করছে। সূত্রের খবর, চা-বাগানের বহু পরিবার অভাব-অনটনে থাকেন। তাঁদেরকেই নিশানা করা হয়েছিল। অসহায় পরিবারগুলোকে মোটা টাকার চাকরির লোভ দেখানো হয়েছিল। একটু ভাল থাকার আশায় পরিবারও রাজি হয়ে গিয়েছিল মেয়ের চাকরির জন্য। এই অসহায় অবস্থাকে হাতিয়ার করে পাচারের ছক কষেছিল দুর্বৃত্তরা।