বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশেরও বেশি ব্যক্তি হাইপারটেনশানের মতো লাইফস্টাইল ডিসিসের কবলে দিন কাটাচ্ছেন। করোনা আবহে হাইপারটেনশানের ঝুঁকিও বেড়েছে অনেক। নানান সময়ের লকডাউনের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর খাবার-দাবার, অধিক অবসাদের ফলে সমস্ত বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে হাইপারটেনশানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
আজ, ১৭ মে বিশ্ব হাইপারটেনশান দিবস। এই দিবসের চলতি বছরের থিম, ‘নিজের ব্লাড প্রেশার মাপো, নিয়ন্ত্রণ কর, দীর্ঘায়ু হও’। এখানে এমন তিনটি যোগাসনের কথা বলা হল, যার সাহায্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে এবং হাইপারটেনশানের ঝুঁকি কমানো যাবে।
১. শবাসন
পদ্ধতি- নিজের পিঠের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। পা সোজা রাখুন এবং দুপাশে হাত ছড়িয়ে স্বস্তিতে থাকুন। ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করুন। শরীর রাখুন স্বাভাবিক এবং স্বস্তিতে। হাতের তালু ওপরের দিকে মুখ করে থাকে যেন।
স্বাভাবিক ছন্দে শ্বাসপ্রশ্বাস চালিয়ে যান। নিজের সমস্ত লক্ষ্য স্থির রাখুন পায়ের আঙুলের ওপর। কিছু সময় পর ধীরে ধীরে নিজের শরীরের সমস্ত অংশকে হাল্কা করুন ও মুক্তি দিন।

তবে এই আসন করতে করতে শুয়ে পড়বেন না। স্বস্তি অনুভব করার পর ধীরে ধীরে শরীর ঘুরিয়ে সুখাসন করুন। কিছু ক্ষণ এ ভাবে থাকুন। এর পর ধীরে ধীরে নিজের চোখ খুলবেন।
বেনিফিট- শবাসন এবং গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়া স্নায়ুন্ত্রকে স্বস্তি প্রদান করে। এর ফলে শরীরের তাপমাত্রা খুব সহজে কমিয়ে ফেলা যায়। এর ফলে অবসাদমুক্ত হওয়া যায় এবং কোষ মেরামতি সম্ভব। আবার গর্ভবতী মহিলারাও এর ফলে লাভ পেতে পারেন।
২ অনুলোম বিলোম- পা মুড়ে বসে পড়ুন। হাঁটুর ওপর হাত রেখে চোখ বন্ধ করে বসে থাকুন। ডান বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠকে নাকের ডান দিকে রেখে বন্ধ করুন। এর পর বাম নাকের ছিদ্র দিয়ে ৪ গুণে গভীর শ্বাস নিন। এবার অনামিকা আঙুল দিয়ে নিজের বাম নাকের ছিদ্র বন্ধ করুন এবং ২ সেকেন্ড এ ভাবেই ধরে রাখুন। এ সময় দুই নাকেই নিজের শ্বাস ধরে রাখবেন, ছাড়বেন না। ডান নাকের দিক দিয়ে নিজের ডান বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ সরিয়ে নিন এবং ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।

এর পর এ ভাবেই ডান নাকের ছিদ্র দিয়ে ৪ গুণে গভীর শ্বাস নিন, এ সময় নিজের অনামিকা রাখুন বাম নাকের ওপর। এর পর দুই সেকেন্ডের জন্য শ্বাস ধরে রাখার পর বাম নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। ৫ মিনিট এ ভাবেই করুন। এ সময় নিজের শ্বাসপ্রশ্বাসের ওপর লক্ষ্য রাখুন।
বেনিফিট- এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, স্মৃতিশক্তি মজবুত হয়, ফুসফুস ও হৃদয় সুস্থ থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই যোগাসনের ফলে ভালো ঘুম আসে এবং অবসাদমুক্ত হওয়া যায়।
৩. ভুজঙ্গাসন
পদ্ধতি- পেটের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত রাখুন বুকের পাশে, শরীরের কাছে। কনুই যাতে বাইরের দিকে পয়েন্ট করে থাকে লক্ষ্য রাখবেন। শ্বাস নিন এবং নিজের কপাল, ঘাড় ও কাঁধ তুলুন।
হাতের ওপর ভর করে কোমরের ওপরের দিকের অংশ ওপরের দিকে তুলুন। শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রেখে ওপরের দিকে মুখ করে থাকুন। পেট যেন, মাটি স্পর্শ করে, সেই বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন।
বেনিফিট- এই আসনের ফলে স্পাইন, নিতম্ব, নিতম্বের পেশী, বুক, পেট, কাঁধ, ফুসফুস মজবুত হয়। রক্ত চলাচলে উন্নতি হয় এবং শরীর অবসাদ মুক্ত হয়।
সতর্কতা- অ্যাস্থমা রোগীদের জন্য এই আসনগুলি কার্যকরী হলেও, কারও অ্যাস্থমা অ্যাটাক এলে সঙ্গে সঙ্গে এটি করা বন্ধ করে দেবেন।