সত্যজিৎ রায়ের 'সোনার কেল্লা' এখনও বাঙালির মন ছুঁয়ে রয়েছে। ৯৭৪ সালের মুক্তি পেয়েছিল সেই ছবি। ‘সোনার কেল্লা’ ছবির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আসছে নতুন এক ওয়েব সিরিজ। নাম রাাখা হয়েছে ‘জয়সলমীর জমজমাট’। যেটির পরিচালনা করেছেন রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রযোজনা করছেন ঐন্দ্রিলা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই টানটান উত্তজনায় ভরা ওয়েব সিরিজে দেখা মিলবে সব্যসাচী চৌধুরীকে। তাঁর বিপরীতে দেখা যাবে মেঘলা দাশগুপ্তকে।
এটা একটা অ্যাডভেঞ্চার, থ্রিলার বলেই জানাচ্ছেন ছবির নির্মাতারা। কেমন এই গল্প?
সিরিজের গল্পে দেখা যাবে, প্রখ্যাত গোয়েন্দা কাহিনি ‘সোনার কেল্লা’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, এক বাঙালি পরিবার জয়সলমেরে বেড়াতে গিয়েছিল। রজত বাবু পেশায় একজন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার, তিনিও সোনার কেল্লার সেই রহস্যময় মুকুলের বাড়ি দেখতে উদ্গ্রীব। সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, কন্যা ও ছোটো পুত্র। কিন্তু গল্প এগোতেই হতেই, তাঁদের ছুটির আনন্দে কালো ছায়া পড়ে। এক মাদক দ্রব্যের প্যাকেট হারিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তারা পড়ে যায় এক ভয়ঙ্কর চক্রের ফাঁদে। পরিবারটি যখন বাঁচার লড়াইয়ে নেমে পড়ে, একের পর এক গোপন রহস্য ফাঁস হতে থাকে, আর ভালোবাসার কঠিন পরীক্ষাও দিতে হয় তাঁদের। মরুভূমিতে বেড়াতে এসে কি তারা বেঁচে থাকবে? বাড়ি ফিরতে পারবে তো? এটা জানতে গেলে অবশ্য সিরিজটি দেখতে হবে।
এই সিরিজে সব্যসাচী চৌধুরী, মেঘলা দাশগুপ্ত ছাড়াও রয়েছেন অভিষেক সিংহ, দেবতনু, অমৃতা দেবনাথ, দেবাশীষ নাথ, শাহির রাজ, মৌমিতা পাল, রাজদীপ পাল, সৌমিত্র বসু (ডিউক), সৌম্য মুখার্জী, স্বর্ণাভ সাধুখা, প্রতীক রায় এবং ওঙ্কার ভট্টাচার্য।
এই সিরিজে নিজের চরিত্র সম্পর্কে সব্যসাচী চৌধুরী বলেন, একজন অভিনেতা হিসেবে, এত বছর ধরে আমি বহু প্রজেক্টে কাজ করেছি। তবে এগুলির মধ্যে জয়সলমীর জমজমাট ছিল নিঃসন্দেহে সবচেয়ে আলাদা ও অত্যন্ত আনন্দদায়ক এক অভিজ্ঞতা। এই সিরিজে আমার চরিত্রের দুটি দিক রয়েছে। প্রথম দিকটা অনেকটাই আমার সঙ্গে মেলে, কিন্তু দ্বিতীয় দিকটা একেবারেই ভিন্ন। তবে এই চরিত্রটি আমার জন্য যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল, বিশেষ করে ভৌগোলিক পরিস্থিতি, প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়া ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা মাথায় রেখে কাজ করেছি। বিশেষ করে, সোনার কেল্লার ছাদে রাত ৩টের সময় শ্যুট করা সত্যিই রোমাঞ্চকর ছিল। তখন জানুয়ারি মাস, আর রাজস্থানের আবহাওয়া ছিল বেশ কঠিন। তবুও, গোটা অভিজ্ঞতা এতটাই গভীর ও স্মরণীয়, যে তা চিরকাল মনের মধ্যে গেঁথে থাকবে।'
সব্যাসাচী আরও বলেন, ‘আমর বেশ মনে পড়ে, একদিন যখন গোটা ইউনিট ছাদের উপর শ্যুটিং করছি, ঠিক তখনই সোনার কেল্লার পশ্চিম দিকে সূর্য ডুবে যাচ্ছিল — সেই মুহূর্তটাই যেন এক যাদুকরী অভিজ্ঞতা হয়ে হৃদয়ে রয়ে গেছে। জয়সলমীরের সোনালি দুর্গ সবসময়ই আমার প্রিয় ছুটি কাটানোর জায়গা। এর আগে আমি বেলুড়মঠ থেকে মোটরবাইকে চেপে সেখানে গিয়েছি। তবে তখন কল্পনাও করিনি যে তিন বছর পর আবার সেখানে ফিরে যাব, তাও আবার টানা ১৬ দিনের জন্য!’
মেঘলা দাশগুপ্ত বলেন, ‘জয়সলমীর জমজমাট’-এর অংশ হতে পারা ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই প্রথমবার আমি রাজস্থানে গিয়েছিলাম। আর আমি ভীষণ খুশি যে আমার কাজই আমাকে সেখানে নিয়ে গেছে! এই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটা একেবারেই আলাদা ছিল। দর্শকেরা সেটার কারণ বুঝবেন যখন সিরিজটি দেখবেন। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, এরকম চরিত্র আমি আগে কখনও করিনি।'
OTT প্ল্যার্টফর্ম ক্লিকে দেখা যাবে এই সিরিজটি।