শাহরুখের কেরিয়ারের অন্যতম মাইলস্টোন ‘কাল হো না হো’। জীবনের এক কঠিন সত্য়কে অতি সহজভাবে তুলে ধরেছিল এই গল্পের ট্র্যাজিক নায়ক অমন। ‘হর পল ইঁয়া জি ভর জিও, জো হ্যায় সমা কাল হো না হো…’, এই লাইন প্রতিধ্বনিত হলে আবেগে ভাসতে বাধ্য হয় সিনেপ্রেমীরা। এই ছবির প্রযোজক ছিল করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশন। এবং পরিচালকের আসনে দেখা মিলেছিল নিখিল আডবানির।
বক্স অফিসে দুর্দান্ত ব্যবসা করার পাশাপাশি দর্শক মনে দাগ কেটেছিল এই ছবি। কাল হো না হো-র কাহিনি লিখেছিলেন করণ, চিত্রনাট্য সাজিয়েছিলেন নিখিল। কিন্তু এই ছবি ঘিরে দুজনের মতপার্থক্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে একটা সময় মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল তাঁদের।
এক সাক্ষাৎকারে এই ঝামেলা নিয়ে মুখ খুললেন নিখিল। পরিচালক জানান, ‘দুর্ভাগ্যবশত ব্লকবাস্টার ছবি কাল হো না হো মুক্তির পর আমার আর করণের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ঘটেছিল, আমরা সেটা নিজেরা কথা বলে মিটিয়ে নিইনি। বরং অন্যরা কী বলছে সেটা বিশ্বাস করেছিলাম, এরপর আমাদের মধ্যে অনেকটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়’।
কিন্তু ঠিক কোন বিষয় নিয়ে পরস্পরকে ভুল বুঝেছিলেন তাঁরা? তা খোলসা করেননি নিখিল। কাল হো না হো-র পর ‘সালাম-এ-ইশক’, ‘চাঁদনি চৌক টু চায়না’, ‘জানে কাহা সে আই হ্যায়’-র মতো ছবি পরিচালনা করেছিলেন নিখিল। তবে লাভের মুখ দেখেনি একটিও। প্রতিটি ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। কিন্তু এই সকল ব্যর্থতাকে ভুলে ‘পাটিয়ালা হাউস’-এর সঙ্গে নতুন শুরুর চেষ্টা করেছিলেন নিখিল। ছবিতে নায়কের চরিত্রে ছিলেন অক্ষয়, লিডিং লেডি অনুষ্কা। ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে সাজানো এই ছবির গল্পের অনুপ্রেরণা ছিলেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার মন্টি পানেসার। এই ছবির ব্যর্থতা বেজায় হতাশ করেছিল নিখিলকে।
পরিচালক রাজশ্রী আনপ্লাগডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘পাটিয়ালা হাউসের ব্য়র্থতার পর আমার সঙ্গে আর কেউ কাজ করতে চায়নি। সকলে আমাকে উপড়ে ফেলতে চেয়েছিল। সবার ধারণা ছিল কাল হো না হো-আমি তৈরি করিনি, করণ জোহরই সব করেছে। আমি নিজের মুখে সর্বদা বলেছি করণের ওই লেখনি ছাড়া, করণের সমর্থন ছাড়া, যশ জোহরের (করণের বাবা) সাপোর্ট ছাড়া এবং শাহরুখ খানকে ছাড়া কাল হো না তৈরি হত না। আমরা একটা পরিবার হিসাবেই ছবিটা তৈরি করেছিলাম’।
কাল হো না হো-র সাফল্য ২০ বছরে ছুঁতে পারেননি নিখিল। তবে তাঁর শেষ ছবি ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ বিশেষ প্রশংসা কুড়িয়েছে। যেখানে লিড রোলে দেখা মিলেছে করণের ঘনিষ্ঠ বন্ধ রানি মুখোপাধ্যায়ের।