ফেডারেশনের চাপে টলিপাড়ায় কাজের স্বাধীনতা নেই! এমনই অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিচালক বিদুলা ভট্টাচাৰ্য, দায়ের হয়েছিল মামলা। আর সেই মামলায় এবার ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উদ্দেশ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, পরিচালককে যেন কোনওভাবেই তাঁর কাজে বাধা দেওয়া না হয়। যদিও এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৩ এপ্রিল।
এবিষয়ে আনন্দবাজার ডট কমকে পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্য জানান, ছোট পদক্ষেপ হলেও বিষয়টা ইতিবাচক। আর এটাই তাঁর কাছে স্বস্তির বিষয়। প্রসঙ্গত, বিদুলার অভিযোগ, পরিচালকরা ছবি বানাতে অনেক কষ্ট করে প্রযোজক জোগাড় করেন। আর সংগঠনের নিয়মের কারণে তাঁরা চলে যান। তাঁর ক্ষেত্রেও এই একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন বিদুলা। তাঁর কথায়, ‘আমরা পরিচালকরা স্বাধীনভাবে কাজ করব, এটাই চাই। সারা দেশেই এই নিয়ম চলে। শুধু টালিগঞ্জেই সেটা হয় না।’
তাঁর আরও অভিযোগ ফেডারেশনের বেছে দেওয়া কর্মীকে নিয়ে কাজ করতে হন পরিচালকরা। তাঁদের স্বাধীনভাবে টেকনিশিয়ান বাছতে দেওয়া হয় না। আউটডোর শুটিংয়ের সময়ও প্রয়োজন না থাকলেও ফেডারেশন অতিরিক্ত কর্মী জোর করে চাপিয়ে দেয়। এতে প্রযোজকের খরচ বাড়ে। 'গুপি শুটিং' শব্দটি নিয়েও আপত্তি বিদুলার। তাঁর দাবি, কেউ কোনও গোপন কাজ করেন না। ফেডারেশনের অযথা নাক গলানোর কারণেই বিরক্ত হয়ে নিজেদের মতো করে কাজ করার চেষ্টা হয়। টালিগঞ্জের পরিচালকরা চাইলে টেকনিশিয়ানের ব্যয় কমিয়ে ভাল ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন, তবে এখানে সেটা করতে দেওয়া হয় না।
প্রসঙ্গত, গত বছর পরিচালক গিল্ড সংগঠনের সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জানিয়েছিল, যার মধ্যে গুরুতর অভিযোগ হল ফেডারেশনের নিয়মের কারণে পরিচালকরা বাংলায় শান্তিতে কাজ করতে পারছেন না। এদিকে স্বরূপ বিশ্বাসও অভিযোগ এনেছিলেন পরিচালক, প্রযোজকদের ৬০ শতাংশ যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত। যার ফলে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন পরিচালকদের একটা বড় অংশ। এই বিষয়টির এখনও কোনও সমাধান হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কেন পরিচালকদের আনা অভিযোগ রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখেননি। যদিও সরকারি আইনজীবীর কাছে এর কোনও সদুত্তর ছিল না। তিনি জানান, এবষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তিনি আগামী শুনানির দিন এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যদিও ফেডারেশনের সভাপতি এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, পরিচালক বিদুলা ভট্টাচার্যের পরিচালনায় হাতেখড়ি ছোটপর্দার হাত ধরে। পরে বড় পর্দায় তিনি 'প্রেম আমার ২' ছবিটি বানিয়েছিলেন। যার প্রযোজক ছিলেন রাজ চক্রবর্তী।