প্রকৃতির বদান্যতায় মীরপুরে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ সাড়ে তিনদিনে গড়ায়। তবে ম্যাচের চারটি ইনিংস মিলিয়ে খেলা হয় মোটে ১৭৮.১ ওভার। টেস্টে দিনপিছু ৯০ ওভার করে খেলা হওয়ার নিয়ম। অর্থাৎ, ওভার সংখ্যার নিরিখে দু'দিনের খেলাও সম্পন্ন হয়নি মীরপুরে।
আসলে চূড়ান্ত ঘূর্ণি পিচে নিউজিল্যান্ডকে বেকায়দায় ফেলে সিরিজ জেতাই উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের। সেই কারণেই মীরপুরে এমন বাইশগজ তৈরি করা হয়, যেখানে ম্যাচের প্রথম ওভার থেকেই যেন বল ঘোরে। বল পড়া মাত্রই পিচ ভাঙতে শুরু করে মীরপুরে। এমন খোঁয়াড়ে ব্যাট করা কতটা মুশকিল, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পায় বাংলাদেশও। শেষমেশ নিজেদের পাতা জালে জড়িয়েই ম্যাচ হারতে হয় তাদের।
ম্যাচ জিতেও মীরপুরের বাইশগজ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন নিউজিল্যান্ডের ক্যাপ্টেন টিম সাউদি। তিনি মীরপুরের পিচকে নিজের কেরিয়ারে দেখা সব থেকে খারাপ পিচের তকমা দেন। শুধু কিউয়ি দলনায়কই নন, আইসিসিও যে এমন পিচ নিয়ে ক্ষুব্ধ সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হয় আয়োজকদের। মীরপুরের বাইশগজকে অসন্তোষজনক আখ্যা দিয়ে কার্যত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কানমলে দিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা।
আইসিসির তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তাদের পিচ ও আউটফিল্ড নজরদারি প্রক্রিয়া অনুযায়ী মীরপুরে ব্যবহৃত বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের বাইশগজ অসন্তোষজনক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ম্যাচ অফিসিয়ালরা দু'দলের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আলোচনার পরে পিচ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন সেই মতো রিপোর্ট জমা দেন আইসিসির কাছে। সব দিক খতিয়ে দেখার পরে মীরপুরের খাতায় একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আইসিসির তরফে।
ম্যাচ রেফারি নিজের রিপোর্টে মীরপুরের বাইশগজকে যথাযথ প্রস্তুত নয় বলে উল্লেখ করেন। অসমান বাউন্স ও হঠাৎ হঠাৎ বল লাফিয়ে ওঠা ক্রিকেটারদের জন্য বিপজ্জনক ছিল বলেও মত ডেভিড বুনের। যদিও মীরপুরের আউটফিল্ডকে ফুলমার্কস দেওয়া হয়েছে আইসিসির তরফে।
মীরপুরের স্টেডিয়ামের এই ডিমেরিট পয়েন্ট আগামী ৫ বছর বজায় থাকবে। এই সময়ের মধ্যে ৬টি ডিমেরিট পয়েন্ট খাতায় যোগ হলেই ১২ মাসের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হবে মীরপুর। অর্থাৎ, ৬টি ডিমেরিট পয়েন্ট সংগ্রহ করা মানেই অন্তত ১২ মাস সেই মাঠে কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজিত হবে না। সুতরাং, আইসিসি কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল যে, এরকম খারাপ পিচে ম্যাচ আয়োজন করতে থাকলে খেলাই দেওয়া হবে না মীরপুরে।