রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে ফের যৌন হেনস্থার অভিযোগ ঘিরে অস্বস্তি। এ বার কাঠগড়ায় এসএফআইয়ের এক রাজ্য কমিটির সদস্য। অভিযোগ উঠেছে, বারবার কুপ্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় রাজনৈতিক প্রতিশোধও নিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে এসএফআই থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এক নেত্রী। লিখিত ইস্তফাপত্র ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের কাছে। ঘটনায় অস্বস্তি ছড়িয়েছে দমদমসহ জেলার সিপিএম শিবিরে।
আরও পড়ুন: বাংলা ভাষাকে ‘অপমান’, অভিনব প্রতিবাদ, BJP-র রাজ্য দফতরে বর্ণপরিচয় পাঠাল SFI
অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত নেতা লেকটাউন এলাকার বাসিন্দা, দক্ষিণ দমদম তাঁর মূল রাজনৈতিক ক্ষেত্র। অন্যদিকে, অভিযোগকারী তরুণী দুর্গাপুরের হলেও পড়াশোনার কারণে গত কয়েক বছর ধরে দমদমেই থাকতেন এবং সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে। তাঁর লেখা অভিযোগপত্র ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। চিঠিতে ওই তরুণী দাবি করেছেন, অভিযুক্ত ছাত্রনেতা একাধিকবার তাঁকে মদ্যপানের প্রস্তাব দেন। এমনকি দমদম ক্যান্টনমেন্টের একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করার পরও নানাভাবে চাপ দেওয়া চলতে থাকে। অভিযোগ, ধারাবাহিকভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে।
তরুণীর দাবি, প্রস্তাব না মানায় তাঁকে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অভিযোগ, এসএফআইয়ের রাজ্য নেতৃত্বের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সংবাদ সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর সেই সুযোগ কেড়ে নেওয়া হয়। আরও গুরুতর অভিযোগ, তাঁকে ব্যবহার করে অন্য এক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌন হেনস্থার মামলা সাজানোর চেষ্টা হয়েছিল।
অভিযুক্ত ছাত্রনেতা দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের প্রাক্তনী। ঘটনাচক্রে, এই কলেজেই কিছুদিন আগে টিএমসিপি-র এক নেতা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলবন্দি আছেন। সেই সময় এসএফআই শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। আর এখন নিজেদের সংগঠনের নেতার বিরুদ্ধেই যৌন হেনস্থার অভিযোগে বিড়ম্বনায় পড়ল এসএফআই।
ইতিমধ্যেই অভিযোগপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সায়নদীপ মিত্র, ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ও সভাপতির কাছে, এমনকি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটিতেও। বর্তমানে জেলার সম্পাদক পলাশ দাস, যিনি আবার দমদম এলাকারই সংগঠনের নেতা।অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএফআই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক আকাশ কর। তাঁর বক্তব্য, বুধবার অভিযোগপত্র পেয়েছেন। সংগঠনের নিয়ম মেনেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।