পঞ্চায়েত ভোটের দিন সকালে খবর ছড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই খবরকে কেন্দ্র করে উত্তালও হয়েছিল এলাকা। তার ফলে বুথে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছিল দেরিতে। সেই 'মৃত' মহম্মদ আবদুল্লা প্রায় ১৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন।
ভোট দিন রাত থেকে নির্দল-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বারাসত ১ ব্লকের পীরগাছা এলাকা। এলাকার নির্দলপ্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। লাঠি, রড, লোহার বাঁশ দিয়ে আবদুল্লা-সহ একধিক ব্যক্তিকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। সেই রাতেই সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় আবদুল্লাকের। পরে ভোরে এলাকায় খবর আসে তাঁর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে।
(পড়তে পারেন। আবার নয়াদিল্লি সফরে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী, অমিত শাহের সঙ্গে কি বৈঠক করবেন?)
ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পীরগাছা। তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে দফায় দফায় অবরোধও হয়। এলাকা কার্যত তৃণমূলশূন্য হয়ে যায়।
বেলাতে এলাকায় যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি আবদুল্লার পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন। এর পর খবর আসে তিনি মারা যাননি। সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। বিকালে তাঁকে বারাসত হাসপাতালে থেকে আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তার পর এক সপ্তাহ ধরে সেখানে চিকিৎসা চলে। পরে তাঁকে সেখান থেকে এনে বিমানবন্দর এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর পরিবারের সদস্য মহম্মদ রফিক সাংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, 'হাসপাতালে তাঁর মাথার বড় অপারেশন হয়। রবিবার বিকালে তাঁকে ছুটি করে আনা হয়েছে।'
তবে তাঁকে এখনও বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়নি। মুড়াগাছার মল্লিক পাড়ার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছে। রফিক জানিয়েছেন, হাসপাতালের খরচ মেটাতে জমি বিক্রি করতে হয়েছে। আর টানা যাচ্ছিল না বলে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাথার খুলির হাড় বেশ কয়েক টুকরো হয়েছে আবদুল্লার। বিশেষ কথা বলতে পারছেন না। চিকিৎসরা জানিয়েছেন, আগামী দুবছর তাঁদের কড়া নজরে থাকতে হবে।
আবদুল্লার স্ত্রী সাহানা বিবির বলেন,'সে সময় অনেকেই সাহায্যে আশ্বাস দিয়েছিলেন এখনও পর্যন্ত কোনও সাহায্য মেলেনি। আমাদের নিজেদের লড়াই নিজেকেই লড়তে হবে।'
বিছানা থেকে উঠে বেশি হাঁটা চলা করতে পারছেন না আবদুল্লা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অপারেশন করা হলেও ভবিষ্যতে নানা সমস্যা হতে পারে।