২০১১ সালের জনগণনা বলছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রতি ১০০০ জন ছেলের অনুপাতে মেয়ের সংখ্যা ৯৫০ জন। তার পর থেকে লিঙ্গ ভারসাম্যে আর কোনও বদল এসেছে কি না, তার কোনও খাতায় কলমে তথ্য নেই। কিন্তু অনেকেরই সন্দেহ, রাজ্যে এমন বহু জায়গাই রয়েছে, যেখানে বেআইনি ভাবে গর্ভের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়। আর তাতে এই ভারসাম্যে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর সেটিকে সামলানোর জন্য অভিনব উদ্যোগের কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
কী ভাবা হচ্ছে? সরকারের সৃতরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ইউএসজি যন্ত্রের বিক্রির উপর নজরদারি চালানো হবে। কেন এমন ভাবনা?
স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনিক স্তরে থাকা অনেকেই সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, ইউএসজি যন্ত্রের মাধ্যমে অতি সহজেই গর্ভের লিঙ্গ জানা যায়। আর সেই কারণেই বিষয়টির উফর নজরদারি দরকার।
অনেকের মতেই, পাড়ায় পাড়ায় বহু ছোট বেসরকারি স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে গর্ভবতী এবং তাঁর পরিবারের অনেকেই বহু সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মীর উপর চাপ সৃষ্টি করেন। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাঁদের বাধ্য করা হয় গর্ভের লিঙ্গ সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে।
আবার কিছু ক্ষেত্রে অনেক অসাধু মানুষও এর সুযোগ নেন। তাঁরা অর্থের বিনিময়ে গর্ভের লিঙ্গ জানিয়ে দেন। এমতাবস্থায় লিঙ্গ ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বহু ক্ষেত্রে ভ্রুণের লিঙ্গ কন্যা হলে, অনেকেই গর্ভপাতের কথা ভাবেন। সেটিই ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। আর এই গোটা প্রক্রিয়াটা শুরুই হয় ইউএসজি পরীক্ষার মাধ্যমে। ফলে যত্রতত্র এই মেশিন বিক্রি আটকাতে ততপর হচ্ছে রাজ্য সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই যন্ত্র এতটাই ছোট যে, এটি একটি বাক্সে ভরে হাতে করে বিভিন্ন বাড়িতেও চলে যাওয়া যায়। ফলে এই যন্ত্র নিয়ে কে কোথায় কী কাজ করছেন, তা সব সময়ে নজরাদারি অসম্ভব। কিন্তু কারা যন্ত্রটি কিনছেন, তাঁরা এই যন্ত্র কেনার পরে কীভাবে ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে একটি প্রাথমিক নজরদারি রাখাই যায়। তেমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই কারণেই এবার থেকে এই যন্ত্র কেনার উপর নজরদারি চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও সরকারি স্তরে ঘোষণা বাকি। কিন্তু ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। এতে রাজ্যে লিঙ্গ ভারসাম্য বজায় রাখা যাবে বলেও বিশ্বাস তাঁদের।