কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ইএনটি বিভাগ। সেখানেই পাঞ্জাবী পরে গিয়েছিলেন একজন ইন্টার্ন। তাঁর গালে ছিল লম্বা দাড়ি। একজন ইন্টার্নের এই বেশ দেখে হঠাৎই তাঁকে 'জঙ্গি' বলে সম্বোধন করে বসেন হাসপাতালেরই এক অধ্য়াপক তথা চিকিৎসক। তিনি ওই ইন্টার্নকে বলেন, এবার থেকে হাসপাতালে সবসময় শার্ট-প্যান্ট পরে আসতে হবে এবং দাড়ি পুরো কেটে ফেলতে হবে।
ওই অধ্য়াপক ইন্টার্নকে আরও বলেন, তাঁর পরনের পাঞ্জাবী ও গালের দাড়ি দেখে রোগীরাও ভীত হতে পারেন। তাঁরাও তাঁকে জঙ্গি ভাবতে পারেন! জানা গিয়েছে, এই ঘটনা ঘটেছে দিন দুয়েক আগে। আর, সেই ঘটনার পরই ওই অধ্যাপক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ছাত্র সংসদে অভিযোগ জানান ওই ইন্টার্ন। পরে ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।
এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হতেই ছাত্রছাত্রীদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার তাঁদের তরফে বিক্ষোভও দেখানো হয়। এরপর গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। জানা গিয়েছে, আগামিকাল (বৃহস্পতিবার - ২২ মে, ২০২৫) ওই ইন্টার্নের সঙ্গে কথা বলবেন অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা। পাশাপাশি, অভিযুক্ত অধ্যাপকের কী বক্তব্য রয়েছে, তাও শোনা হবে।
যদিও ইতিমধ্য়েই এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ওই অধ্যাপক। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, 'আমার এই মন্তব্যে ওর যদি খারাপ লেগে থাকে, তবে আমি দুঃখিত। মজার ছলে বলেছিলাম। ভবিষ্যতে আর এমন মন্তব্য করব না। অনেকের মনে হচ্ছে, আমি এটা সাম্প্রদায়িকভাবে বলেছি। কিন্তু, আদতে ওভাবে বলতে চাইনি। আমার কাছে সব ছাত্র সমান। ওকে দাড়ি ছেঁটে আসতে বলেছিলাম, কারণ এটা হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়। অনেকের বিষয়টি অপরিচ্ছন্ন মনে হতে পারে।'
আর, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেছেন, 'লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য কমিটি গড়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এসব সংবেদনশীল বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। যেখানে সেখানে মন্তব্য করা উচিত নয়। অনুন্ধান কমিটি খতিয়ে দেখছে। দু'পক্ষের সঙ্গেই কথা বলা হবে।'