অসমে পশ্চিমবঙ্গের এক বাসিন্দাকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করার চেষ্টায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গেও জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) চাপিয়ে দেওয়ার ছক কষছে। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত বিরোধী দলকে একজোট হয়ে প্রতিবাদে সামিল হওয়ার ডাক দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ৩ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর ছবি পোস্ট করে পশ্চিমবঙ্গে NRCর দাবি তুললেন শুভেন্দু
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসী। তাঁর পুরনো ভোটার তালিকায় ছিল এবং তাঁর বৈধ পরিচয়পত্র রয়েছে। তা সত্ত্বেও অসম সরকার তাঁকে বিদেশি বা ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ বলে সন্দেহ করে এনআরসির নোটিস পাঠিয়েছে। এই আচরণকে মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্রের উপর ‘পরিকল্পিত আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন। এই বিষয়ে সোমবারই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম। তিনি জানান, উত্তমকুমার ব্রজবাসী পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক, তাঁর সমস্ত নথি ঠিকঠাক আছে। তার পরেও অসমের বিজেপি সরকার যেভাবে তাঁকে হয়রানি করছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একজন প্রান্তিক মানুষ, যিনি ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এই বাংলায় বসবাস করছেন, তাঁকে অসমে গিয়ে এমন প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে, যা স্পষ্টভাবে একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়। উত্তমকুমার ব্রজবাসী উত্তর রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ, সে কথাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, প্রান্তিক মানুষদের ভয় দেখিয়ে তাঁদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা এক নোংরা ও উদ্দেশ্যমূলক রাজনীতি। সবশেষে বিজেপিকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে মমতা বলেন, যদি কেউ ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোকে ধ্বংস করতে চায়, তবে বাংলা কখনও চুপ করে থাকবে না।
অসমে এনআরসির নামে পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের হয়রানি নিয়ে এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, বাংলা বলার জন্য ভিন রাজ্যে গিয়ে লাগাতার হেনস্তার শিকার হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকরা। এ নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওড়িশা, গুজরাট সহ বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এমনকি বাংলাদেশে পুশব্যাক করার মতো ঘটনাও ঘটছে। সেই আবহে এমন ঘটনায় ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।